বাংলাদেশ বিমানে নয়, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সেই দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া

বাংলাদেশ বিমানে নয়, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সেই দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া

যুক্তরাজ্যের লন্ডনে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগামী ৫ মে দেশে ফিরছেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সাধারণ একটি ফ্লাইটে তিনি দেশে ফিরবেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত কাতারের আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তিনি দেশে ফিরবেন এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

শনিবার (৩ মে) সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ম্যাডাম কাতারের আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সোমবার (৫ মে) দেশে আসবেন। তবে সময়সূচি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

এর আগে শুক্রবার (২ মে) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেন, ইনশাল্লাহ ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) আগামী ৫ তারিখ সকালে দেশে ফিরছেন। আমরা যতদূর জানি যে, সাথে উনার দুই বউ‘মা (তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও আরাফাত রহমানের স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান) আসার কথা রয়েছে।

গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডন যান। লন্ডনে পৌঁছেই লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। টানা ১৭ দিন লন্ডন ক্লিনিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে ২৫ জানুয়ারি থেকে খালেদা জিয়া তারেক রহমানের বাসায় তাদের অধীনে চিকিৎসাধীন।

অর্ধযুগের বেশি সময় পরে এবারই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করেছেন খালেদা জিয়া।

কেমন আছেন খালেদা জিয়া জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘মোটামুটি আলহামদুলিল্লাহ আগের চেয়ে উনি (খালেদা জিয়া) ডেফিনেটলি ভালো।’

কীভাবে দেশে ফিরছেন সে বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ম্যাডামের দেশে ফেরার ব্যাপারে কাতারের আমিরের কাছ থেকে যে অ্যাম্বুলেন্সটা উনাকে লন্ডনে নেওয়ার জন্য পেয়েছিলাম, সেটা এখন একটু বিলম্বিত হচ্ছে টেকনিক্যাল রিজিয়নস। সেজন্য ম্যাডাম ঠিক করেছেন যে, ওইটা (এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) যদি শেষ মুহূর্তে না পাওয়া যায়, উনি বাংলাদেশ বিমানেই আসবেন। বাংলাদেশ বিমানে সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৪ তারিখ (৪ মে) উনি রওনা হলে ইনশাল্লাহ ৫ তারিখ সকালে দেশে এসে পৌঁছাবেন।’

এদিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসা ‘ফিরোজা’কে প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান। তিনি বলেন, ম্যাডামের বাসভবন পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে।

খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন ম্যাডাম খালেদা জিয়া দেশে ফিরছেন, এ সংক্রান্ত সব প্রস্তুতির কাজ আমরা করছি। ইতোমধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থায় সব কিছু জানানো হয়েছে।

লন্ডন থেকে দেশে ফেরার বিষয়টি জানিয়ে গত সপ্তাহে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনকে চিঠি দেন।

বিএনপির মহাসচিবের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার লন্ডন ও দোহার বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে দেশে ফেরাতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

বিএনপি চেয়ারপাসন ২০১৮ সালে তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। কোভিড-১৯ মহামারির সময় সরকার তাকে বিশেষ বিবেচনায় সাময়িক কারামুক্তি দেয়।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দি ছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত।