সিলেটে বিএনপির মিছিলে গুলি: পুলিশ কমিশনারসহ ৫৯ জনের নামে মামলা
সিলেট নগরের সোবাহানি ঘাটে বিএনপি-যুবদল-ছাত্রদলের মিছিলে হামলা ও গুলি চালানোর অভিযোগে এবার আদালতে মামলা হয়েছে। মামলায় সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার, সিলেট সিটি করপোরেশনের সদ্যসাবেক মেয়র, সদ্য সাবেক তিন এমপিসহ ৫৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সিলেটের অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক আব্দুল মোমেনের আদালতে এই মামলাটি দায়ের করেন সাজন আহমদ সাজু নামের এক দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজের এক শিক্ষার্থী। তিনি ওইদিনের হামলায় মারাত্মক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন।
আদালত এই এজাহার এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান চৌধুরী।
এরআগে সোমবার একই আদালতে সিলেটে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে সাংবাদিক এটিএম তুরাব ও শাবিছাত্র রুদ্র সেন নিহতের ঘটনায় দুটি মামলা হয়। এসব মামলায়ও সাবেক এমপি, মেয়র, পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের আসামি করা হয়। এছাড়া রুদ্র সেন হত্যা মামলায় শাবির সদ্য বিদায়ী উপাচার্য ফরিদ উদ্দিনসহ প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা একাধিক শিক্ষককেও আসামি করা হয়।
মঙ্গলবার সাজন আহমদ সাজু বাদী হয়ে দায়ের করা এজাহারে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. জাকির হোসেন খান, গোয়েন্দা বিভাগের উপ কমিশনার তাহিয়াত আহমদ চৌধুরী, সিআরটি বিভাগের প্রধান শাহরিয়ার আল মামুন, অতিরিক্ত উপ কমিশনার সাদেক কাওসার দস্তগীর, এসআই পলাশ চন্দ্র দাস, উপ কমিশনার আজবাহার আলী শেখ, এসআই সাইদুর রহমান, বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কল্লোল গোস্বামী, সিসিক কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম, মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সংসদ সদস্য রনজিত সরকার, সিসিক কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ, মহানগর যুবলীগ সভাপতি আলম খান মুক্তি, বদরুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ, সিলেট-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেট সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ শোভন, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাশ মিঠু, এসআই শামীম, এমসি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি দিলোয়ার হোসেন রাহি, সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, প্রচার সম্পাদক ফরহাদ, শুভ, যুবলীগ নেতা জিহাদ, জাকিরুল আলম জাকির, শামিম ইকবাল, আব্দুল্লাহ আল মামুন, কাজী জুবায়ের, যুবলীগ নেতা হিরক রঞ্জন দে পাপলু, লিলন আহমদ, শাবিপ্রবির কলেজ ইন্সপেক্টর তাজিম উদ্দিন, মহানগর ছাত্ররীগের সাধারণ সম্পাদক নাইম আহমদ, মো. ইয়াহইয়া, কাজী আশরাফ খান মাসুম, মনজুর, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আহমদ আল কবির, সদস্য তামীম আহমদ, মস্তাক আহমদ পলাশ, তমিজ উদ্দিন, বাদল, আমির হোসেন, সৈয়দ এনায়েতুল বারী মোর্শেদ, হোসেন উল্লা নাদিম, সাব্বির, আফজাল, জাকারিয়া মাহমুদ, সনি, শেখ শাকিল, ইসমাইল মাহমুদ সুজন ও মইনুল ইসলাম মইনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আর ৩/৪০০ জনকে আসামি করেন।
এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ৪ আগস্ট দুপুরে নগরের সোবহানীঘাট এলাকায় বিএনপি যুবলদল ছাত্রদল শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করলে পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে অন্য আসামিরা গুল বর্ষণ করে এবং ককটেল ও বোমা নিক্ষেপ করে। এতে ছাত্রজনতা ও পথচারী মারাত্মভাবে আহত হন।
বাদী নিজেও মুখে ও চোখে গুলিবিদ্ধ হন এবং শরীরে স্প্লিন্টারের ক্ষতিচিহ্ন রয়েছে দাবি করে এজাহারে উল্লেখ করেন, ওইদিনের হামলার আহত অনেকে এখন হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।