তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে কঠোর বার্তা ড. ইউনূসের

তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে কঠোর বার্তা ড. ইউনূসের

তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে কঠোর বার্তা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিষয়টি দীর্ঘদিন ঝুলে থাকায় কোনো দেশেরই লাভ হচ্ছে না উল্লেখ করে পাণি বণ্টনের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনার কথা জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (০৬ সেপ্টেম্বর) ভারতের সরকারি বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই) প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

ড. ইউনূস বলেন, দুই দেশের মধ্যকার পানি বণ্টনের বিষয়টি অবশ্যই আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে সমাধান করা উচিত। বাংলাদেশের মতো ভাটির দেশগুলোর নির্দিষ্ট অধিকার রয়েছে। এ অধিকার বজায় রাখতে চাই।

তিনি বলেন, এ ইস্যুতে বসে (পানি বণ্টন) কোনো উদ্দেশ্য সাধন হচ্ছে না। আমি যদি জানি কি পরিমাণ পানি পাব, যদিও আমি খুশি না হয়ে সই করি, তাও সেটিই ভালো হবে। এ সমস্যার সমাধান করতে হবে।

এর আগে পিটিআইকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইস্যুতে সাক্ষাৎকার দেন। তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত রেখে দিতে চাইলে তাকে চুপ থাকতে হবে যতক্ষণ না বাংলাদেশ তাকে ফেরত চায়। গত ১৩ আগস্ট শেখ হাসিনার দেওয়া রাজনৈতিক বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে এ মন্তব্য করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান। তিনি শেখ হাসিনার ওই মন্তব্যকে অবন্ধুসুলভ বলেও উল্লেখ করেন।

ড. ইউনূস বলেন, ভারতে তার অবস্থানের কারণে কেউ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে না। কেননা আমরা তাকে ফেরাতে চাই। তিনি সেখানে থেকে যেসব কথা বলছেন তা সমস্যার সৃষ্টি করছে। তিনি যদি চুপ থাকতেন তাহলে আমরা ভুলে যেতাম। তিনি নিজের জগতে থাকলে জনগণও বিষয়টি ভুলে যেত। কিন্তু তিনি ভারতে অবস্থান করে বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছেন। বিষয়টি কেউ ভালোভাবে নিচ্ছে না।

তিনি বলেন, আমরা বেশ দৃঢ়ভাবে বলেছি, তার চুপ থাকা উচিত। এটি আমাদের প্রতি অবন্ধুসুলভ আচরণ। তিনি সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন এবং সেখান থেকে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এমন নয় যে তিনি স্বাভাবিক পথেই সেখানে গেছেন। জনগণের অভ্যুত্থান এবং জনরোষের কারণে তিনি সেখানে গেছেন।

গত ১৩ আগস্ট শেখ হাসিনা ‘ন্যায়বিচার’ দাবি করে বলেন, সাম্প্রতিক ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’, হত্যা ও ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই তদন্ত, চিহ্নিত এবং শাস্তি দিতে হবে।

এসব বিষয় সামনে রেখে ড. ইউনূস বলেন, এটি আমাদের বা ভারতের কারও জন্য ভালো নয়। এ নিয়ে অস্বস্তি রয়েছে।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনার আমলে হওয়া নৃশংসতার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এ জন্য তাকে (শেখ হাসিনা) দেশে ফেরানো প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, তাকে ফিরিয়ে না আনা হলে বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে থাকতে পারবে না। তিনি যে ধরনের নৃশংসতা করেছেন তার জন্য তাকে সবার সামনে বিচার করতে হবে।