১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি ৭২ তরুণ-তরুণীর
সুনামগঞ্জে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল(টিআরসি) পদে ৭২ তরুণ-তরুণী প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। মাত্র ১২০ টাকা খরচ করে সোনার হরিণ পুলিশে চাকুরী পেয়েছেন তারা। দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা নির্বাচিতদের অনেকে অনুভূতির কথা জানাতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
বৃহস্পতিবার (৫ডিসেম্বর) বিকেল ৪ টায় সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে প্রাথমিক বাছাইয়ে নির্বাচিত ৭২ জনের চুড়ান্ত মেডিক্যাল রিপোর্ট প্রদানের বিষয়টি ব্রিফিং অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান, পুলিশ সুপার আ. ফ. ম. আনোয়ার হোসেন। বিকেল ৪ টায় ব্রিফিং শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা ৫টা পর্যন্ত।
এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাকির হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহিদুল ইসলাম খানসহ জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিফিং-এ জানানো হয়, এবার পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল(টিআরসি) পদে ২ হাজার ৫১০ জন প্রতিযোগিতা মূলক নিয়োগে আবেদন করেন। ২৯ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ২ হাজার ৪৪১ জন শরীরিক পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে গত ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষায় ৫৭৪ জন অংশ নিয়ে ২০৩ জন কৃতকার্য হন। এই প্রার্থীরা পরবর্তীতে গত ১৯ ও ২০ নভেম্বর মনস্তাত্ত্বিক এবং মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন। চুড়ান্ত পরীক্ষায় ৭২ জন পাশ করেছে। এর মধ্যে ৬ জন নারী। অপেক্ষমান ১৩ জন রয়েছেন বলেও জানান পুলিশ সুপার।
পুলিশ সুপার অরো জানান, শতভাগ স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। তিনি সততা, নিষ্ঠা এবং পেশাদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের সম্মান বৃদ্ধিতে টিআরসিদের প্রতি আহ্বান জানান।
উপস্থিত সাংবাদিকবৃন্দ শতভাগ স্বচ্ছতার ভিত্তিতে উত্তীর্ণ নবীন প্রার্থীদের সৎ, নিষ্ঠাবান এবং দেশপ্রেমিক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে,এই নবীন প্রজন্মের হাত ধরে বাংলাদেশ পুলিশের সুনাম আরও উজ্জ্বল হবে এবং দেশের সেবায় তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
নিয়োগ পাওয়াদের বেশিরভাগ হত দরিদ্র পরিবারের সন্তান। এদের মধ্যে শর্মিলা আক্তার, সামীম আহমদ সামী, সাইফুল্লা মিয়া সহ অনেকেই অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। একটি স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাধারণ পরিবারের সন্তানদের স্বপ্ন পূরণের সুযোগ করে দেওয়ায় জেলা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তারা।
তারা জানান, তাদের পরিবার খুব কঠিন অবস্থার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। চাকরীর খুব প্রয়োজন ছিল। তাদের ধারনা পুলিশের চাকরি পেতে বড় অঙ্কের ঘুষ লাগবে। কিন্ত তারা কোন আর্থিক লেনদেন ছাড়াই নিজেদের যোগ্যতায় চাকরী পেয়েছেন। সেজন্য মহান আল্লাহ্র নিকট শুকরিয়া ও পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খান কে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।