সহযোগীদের খবর

আ.লীগের শেষ ৫ বছরে ১৬ হাজারের বেশি খু ন

আ.লীগের শেষ ৫ বছরে ১৬ হাজারের বেশি খু ন

প্রথম আলো

‘আ.লীগের শেষ ৫ বছরে ১৬ হাজারের বেশি খুন’-এটি দৈনিক প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ পাঁচ বছরে সারা দেশে ১৬ হাজারের বেশি মানুষ খুনের শিকার হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৯টির বেশি খুনের ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা অপরাধ পরিসংখ্যানে এই তথ্য এসেছে। পাঁচ বছরের বেশি সময় বন্ধ রাখার পর গত বৃহস্পতিবার পুলিশ এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করে।

পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাবে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ১৬ হাজার ৫৫৫টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এই হিসাবটা এসেছে দায়ের হওয়া মামলার সংখ্যা থেকে। সাধারণত জোড়া খুন বা একসঙ্গে ততোধিক খুনের ঘটনায় একটি মামলা হয়।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বছরে গড়ে খুনের ঘটনা ঘটেছে ৩ হাজার ৩১১টি। এমনকি করোনা মহামারির সময় ২০২০ সালেও সাড়ে তিন হাজার খুনের ঘটনা ঘটেছে।

এই পাঁচ বছরে ছিনতাইয়ের মামলা হয়েছে ৯ হাজার ৯৫৫টি আর ডাকাতির মামলা হয়েছে ১ হাজার ৬৮৫টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রের মতে, ছিনতাই ও ডাকাতির প্রকৃত ঘটনা অনেক বেশি হবে। কারণ, বেশির ভাগ ছিনতাইয়ের ঘটনায় ভুক্তভোগীরা মামলা করেন না, অনেকে এটাকে আরেক ভোগান্তি মনে করেন। ডাকাতির ঘটনায়ও পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে মামলা নিতে চায় না। ডাকাতির মামলা চুরি হিসেবে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া শেখ হাসিনা সরকারের এই পাঁচ বছরে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ২ হাজার ৪৫২টি। আর চুরির অভিযোগে প্রায় ৫৫ হাজার মামলা হয়েছে।

মামলার সংখ্যার ভিত্তিতে দেশের অপরাধ পরিসংখ্যান নিয়মিত পুলিশ সদর দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হতো। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য ‘গায়েবি মামলা’ করে তৎকালীন সরকার। ঘটনা না ঘটলেও পুলিশের ওপর হামলা ও ককটেল নিক্ষেপের অভিযোগে এসব মামলা হয়। এ নিয়ে ২০১৮ সালের ২০ ডিসেম্বর ‘এক ভয়ংকর সেপ্টেম্বর!’ শিরোনামে প্রথম আলোতে খবর প্রকাশিত হয়। ওই সেপ্টেম্বরে কেবল ঢাকাতেই পুলিশ বাদী হয়ে ৫৭৮টি নাশকতার মামলা হয়েছিল। তাতে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা বলা হয়েছে ৯০ বার। শহরময় পুলিশের ওপর এত হামলা, সহিংসতার কিছুই টের পায়নি ঢাকার মানুষ। অবিশ্বাস্য এসব মামলার তথ্য ছাপা হওয়ার পর পুলিশ সদর দপ্তর তাদের ওয়েবসাইটে অপরাধ পরিসংখ্যান দেওয়া বন্ধ করে দেয়। আগের পরিসংখ্যানও সরিয়ে ফেলে।

নবনিযুক্ত আইজিপি বাহারুল আলম গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় ওয়েবসাইটে অপরাধের পরিসংখ্যান প্রকাশ বন্ধ রাখার বিষয়টি তুলে ধরেন সাংবাদিকেরা। এরপর আইজিপির নির্দেশে একসঙ্গে পাঁচ বছর আট মাসের (২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত) তথ্য প্রকাশ করা হয়।

যুগান্তর

দৈনিক যুগান্তরের প্রধান শিরোনাম ‘থার্ড টার্মিনালে মেগা দুর্নীতি’। খবরে বলা হয়, অনিয়ম-দুর্নীতি আর লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পে। গত সরকারের আমলে যে টার্মিনাল চালুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ‘যোগাযোগের নতুন যুগের সূচনা হবে’ বলা হচ্ছিল তার ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বলা হচ্ছে ৭ হাজার কোটি টাকার প্রাক্কলিত ব্যয় কীভাবে ২২ হাজার কোটি টাকা হলো? প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, কমপক্ষে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে এই মেগা প্রকল্পে।

জানা গেছে, টার্মিনালের টেকসই কার্যকারিতা নিয়েও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধেও ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, এই প্রকল্পে ঘুস ছাড়া কোনো ফাইলে স্বাক্ষর করেন না প্রকল্প পরিচালক। তাকে ঘুস দিতে হয় ডলারে এবং দেশের বাইরে। এসব নিয়ে ইতোমধ্যে জাপানি ঠিকাদারের সঙ্গে প্রকল্প পরিচালকের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। দীর্ঘদিন কাজও বন্ধ ছিল। প্রকল্প পরিচালক স্বাক্ষর না করায় এবং সরকারি ভ্যাট-ট্যাক্স পরিশোধ না করায় অর্ধশত গুরুত্বপূর্ণ ইকুইপমেন্ট দীর্ঘদিন চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন শুল্ক বন্দরে আটকা ছিল। এখনো অনেক পণ্য আটকা আছে। কাস্টমস থেকে বারবার এসব পণ্যের ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) পাঠানো হলেও তিনি রেসপন্স না করায় পণ্যগুলো ছাড় করতে বেঘাত ঘটছে। এতে কোটি কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি ও জরিমানা দিতে হয়েছে।

শুরুর দিকে প্রকল্প পরিচালকসহ সিন্ডিকেটের সহায়তায় চীন, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আনা নিম্নমানের প্রায় ২০-২৫টি পণ্য ফেরত পাঠানো হয়। পরে ওই পণ্যগুলো ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আনা হয়। এতে প্রকল্প পরিচালকসহ সিন্ডিকেটের কমিশন বন্ধ হয়ে যায়। ক্ষুব্ধ হয়ে প্রকল্প পরিচালক দীর্ঘদিন এসব পণ্য বন্দর থেকে ছাড় করেননি। এমনকি ইউরোপীয় মানের হওয়ায় পণ্যগুলোর দামে যে ভেরিয়েশন হয়েছিল সেটির অনুমোদনও আটকে রাখেন তিনি। যার কারণে প্রকল্পের ঠিকাদার এডিসির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার চরম দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।

জানা গেছে, প্রকল্পের জন্য পাথর কেনা হয়েছে সিলেট থেকে কিন্তু ইতালি থেকে ক্রয় দেখিয়ে সে পাথরের ইন্সফেকশন করতে প্রকল্পের একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ইতালি ভ্রমণের অভিযোগ আছে। এছাড়া ১৮শ স্কয়ার ফুট টাইলসের মান দেখতেও বিদেশ ভ্রমণের অভিযোগ আছে প্রকল্প পরিচালকসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে। প্রকল্পের কেনাকাটা নিয়ে বড় ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। শুরুর দিকে দক্ষিণ কোরিয়া, চীনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য নিম্নমানের ইকুইপমেন্ট ও পণ্য কেনা হয়েছিল। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নজরে আসার পর এসব পণ্যের মান যাচাই করা হয়। এতে বেশির ভাগ পণ্য ও ইকুইপমেন্ট নিম্নমানের প্রমাণ হওয়ায় সেগুলো সংশ্লিষ্ট দেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

কালের কণ্ঠ

‘পেনশনে পেরেশানি’-এটি দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, নোয়াখালীর ডেল্টা জুট মিল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হোসাইন আহমেদ অবসরে গেছেন ২০২২ সালের ১ মার্চ। তিনি এখনো তার অবসর সুবিধার (পেনশন) টাকা পাননি। প্রায়ই তিনি রাজধানীর পলাশীর ব্যানবেইস ভবনে অবসর সুবিধা বোর্ডে এসে খবর নেন। কিন্তু প্রতিবারই তাকে হতাশ হয়ে ফিরে যেতে হয়।

কবে তিনি প্রাপ্য টাকা পাবেন, তা জানাতে পারেননি অবসর বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। গত বুধবার অবসর সুবিধা বোর্ডের সামনে হোসাইন আহমেদের সঙ্গে কথা হয়। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘৩৫ বছর শিক্ষকতা করে প্রায় তিন বছর আগে অবসরে গেছি। ছেলেমেয়েরাও সেভাবে সচ্ছল নয়।

নানা রোগে ভুগছি। মনে করেছিলাম, পেনশনের টাকাটা পেলে একটু ভালো করে চিকিৎসা করাব। ছেলের একটা কর্মের ব্যবস্থা করব। কিন্তু কবে টাকা পাব, তা বলতে পারছে না কেউ।

শুধু হোসাইন আহমেদই নন, এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৭৪ হাজারের বেশি শিক্ষক অবসর ও কল্যাণের টাকার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। প্রতিদিনই শত শত শিক্ষক পেনশনের টাকার জন্য ধরনা দিচ্ছেন ব্যানবেইস ভবনে। শিক্ষক-কর্মচারীদের আবেদনের চার বছরেও মিলছে না টাকা। পেনশনের টাকা পেতে বড় পেরেশানির মধ্যে পড়েছেন তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সব শিক্ষকের পাওনা একবারে পরিশোধ করতে সরকারের কাছ থেকে এককালীন সাত হাজার ২০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ প্রয়োজন।

প্রতিবছর বাজেটে ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন। কিন্তু অবহেলিত এসব শিক্ষকের পেনশনের টাকা পরিশোধ করতে সরকারের তেমন আগ্রহ নেই। এমনকি সব কিছু জেনেশুনে নিশ্চুপ শিক্ষা ও অর্থ মন্ত্রণালয়।

সমকাল

দৈনিক সমকালের প্রথম পাতার খবর ‘পুলিশের ওয়েবসাইটে তথ্য মিলছে, ৬ বছরে বেশি খুন জুলাই-আগস্টে’। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকাসহ সারাদেশে ছয় বছরে খুন হয়েছে ১৯ হাজার ৪০ জন। সে হিসাবে গড়ে প্রতি মাসে নিহত হয় ২৮০ জন। তবে গত জুলাই-আগস্টে ঢাকাসহ সারাদেশে খুনের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি, ৯৫২ জন।

বাংলাদেশ পুলিশের ওয়েবসাইটের ক্রাইম (অপরাধ) থেকে এ তথ্য মিলেছে। ওয়েবসাইটের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে খুন হয়েছে এক হাজার ৫৩৩ জন। সে হিসাবে গড়ে প্রতি মাসে ২৫৫ জন মারা গেছে। পারিবারিক, সন্ত্রাসী বা দুর্বৃত্তের হাতে এসব খুনের ঘটনা ঘটে।

তবে গত জুলাই ও আগস্টে নিহতের সংখ্যা ৯৫২, গড়ে ৪৭৬ জন। আন্দোলন ছাড়াও পারিবারিক, সন্ত্রাসী বা দু্র্বৃত্তদের হাতে খুনের ঘটনা আছে এই তালিকায়। অবশ্য জুলাই-আগস্টে গণআন্দোলনের সময় মৃত্যুর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে– তা বিভিন্ন সংগঠনের তথ্যে উঠে এসেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির তথ্যানুযায়ী, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে জুলাই-আগস্টে নিহতের সংখ্যা এক হাজার ৫৮১ জন। অবশ্য পুলিশ জুলাই আগস্টে যে তালিকা করেছে, সেটি শুধু মামলার ভিত্তিতে। আগস্টের পরও আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় মামলা অব্যাহত রয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর সমকালকে বলেন, মামলার বিপরীতে পরিসংখ্যান দেওয়া হয়। জুলাই-আগস্টে খুনের যে পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে তা মামলা থেকে। ওই দুই মাসে খুনের ঘটনায় যেসব মামলা হয়েছে, সেগুলো তালিকায় দেওয়া হয়েছে। জুলাই-আগস্টে নিহতের ঘটনায় সেপ্টেম্বর-অক্টোবর-নভেম্বরেও মামলা হয়েছে। এখনও মামলা হচ্ছে। যে মাসে মামলা হয় সেই মাসের তালিকায় সংখ্যা উঠানো হয়।

ইত্তেফাক

‘সিন্ডিকেটের কারসাজিতে হাওয়া সয়াবিন বোতল’-এটি দৈনিক ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাজার থেকে বোতলজাত সয়াবিন তেল রীতিমতো উধাও হয়ে গেছে। বিশেষ করে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এক থেকে দুই লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই বললেই চলে। ক্রেতারা বাজারে একাধিক দোকান খুঁজে দুই-একটি বোতলজাত সয়াবিন পেলেও দাম রাখা হচ্ছে বেশি। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, মহাখালী, শান্তিনগর ও তুরাগ এলাকার নতুন বাজারে খোঁজ নিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে।

কাওরান বাজারে গতকাল এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিন কিনতে যান আমিনুল ইসলাম। কিন্তু কয়েক দোকান ঘুরেও তিনি পাননি। পরে বাধ্য হয়ে খোলা সয়াবিন তেল কিনে বাড়ি ফিরেছেন। রাজধানীর একাধিক বাজারের খুচরা ও পাইকারী ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ভোজ্য তেল পরিশোধন কোম্পানিগুলো বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ করছে না। এর মধ্যে দুই-একটি কোম্পানি করলেও তা চাহিদার তুলনায় খুবই কম।

নাম না প্রকাশের শর্তে এই ব্যবসায়ীরা বলেছেন, বাজারে সরবরাহ কমিয়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হচ্ছে। আগামী রমজানকে সামনে রেখে কোম্পানিগুলো সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর জন্য এটা করছে বলে তারা অভিযোগ করেছেন। এদিকে ভোজ্য তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার শুল্ককর কমালেও এর কোনো ইতিবাচক প্রভাব পড়েনি বাজারে। আমদানিকারকরা বলেছেন, বর্তমানে বিশ্ববাজারে ভোজ্য তেলের দাম বাড়তি। এ অবস্থায় তারা ভোজ্য তেলের দর সমন্বয়ের দাবি জানিয়েছেন।  

কাওরান বাজারের রামগঞ্জ জেনারেল স্টোরের স্বত্বাধিকারী জাকির হোসেন গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ নেই। কোম্পানিগুলো তেল সরবরাহ করছে না। একই কথা জানিয়ে এই বাজারের আরেক ব্যবসায়ী আনোয়ার ট্রেডার্সের জসিম উদ্দিন বলেন, দোকানে তেল না থাকায় তার ব্যবসা কমে গেছে। কারণ, ক্রেতারা তেলের সঙ্গে অন্যান্য পণ্যও কিনে। তিনি বলেন, অনেক তাগাদা দেওয়ার পর দুই-একটি কোম্পানি অল্প কিছু বোতলজাত সয়াবিন তেল দিলেও এর সঙ্গে আটা, ময়দা কেনার শর্ত জুড়ে দিচ্ছে। অথচ বাজারে এই কোম্পানিটির আটা, ময়দার চাহিদা কম। এতে সমস্যা পড়তে হচ্ছে।

নয়া দিগন্ত

আলজাজিরার বিশ্লেষণ নিয়ে দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রথম পাতার খবর ‘বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্ব ও টানাপড়েনের নেপথ্যে কী?’। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ও ভারতের ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক কার্যত ভেঙে পড়ার অবস্থায় পৌঁছেছে। দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্ক হিমশীতল অবস্থা থেকে চরম তিক্ত অবস্থার দিকে যাচ্ছে। এই অবস্থার শুরু বাংলাদেশের সম্মিলিত সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর। একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আসামি হিসেবে গত ২৫ নভেম্বর গ্রেফতার হন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস।

আলজাজিরার একটি প্রতিবেদনে এমন বিশ্লেষণ করে বলা হয়েছে, গত আগস্ট মাসে শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে টিকতে না পেরে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পলায়নের পর থেকেই হিমশীতল পর্যায়ে পৌঁছেছিল দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। তবে গত কয়েক সপ্তাহের ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর বুলিয়ে দেখলে সহজেই অনুমেয় যে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন দুই ভারতীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় আন্দোলন শুরু করে বিজেপি এবং তার অন্যান্য মিত্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। সেই ধারাবাহিকতায় সোমবার ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে হিন্দু সংঘর্ষ জোট নামের একটি সংস্থার শতাধিক কর্মী-সমর্থক।

দুই প্রতিবেশীর টানাপড়েনের নেপথ্যে কী? : আপাতভাবে মনে হতে পারে যে শেখ হাসিনার ভারতে পলায়ন এবং চিন্ময় দাসের গ্রেফতারই বাংলাদশ এবং ভারতের সাম্প্রতিক টানাপড়েনের উৎস বা কারণ; কিন্তু সত্য হলো এই টানাপড়েনের শেকড় অনেক গভীরে। রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক টানাপড়েনের শেকড় আওয়ামী লীগের বিগত ১৫ বছরের শাসনামলে বিরোধী ও ভিন্নমতাবলম্বীদের দমন-পীড়ন ও নির্যাতনের মধ্যে নিহিত।

বণিক বার্তা

দৈনিক বণিক বার্তা প্রধান শিরোনাম ‘গত চার মাসে বৈদেশিক মুদ্রার ক্ষয় ৩ বিলিয়ন ডলার’। খবরে বলা হয়, আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে দেশের রফতানি বেড়েছে ৮ শতাংশের বেশি। আর রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে প্রায় ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত। তবুও এ সময়ে অব্যাহত থেকেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ক্ষয়। এ সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ কমেছে প্রায় ১ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বিদেশী হিসাবে (নস্ট্রো অ্যাকাউন্ট) ডলার স্থিতি কমেছে প্রায় ১ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। সব মিলিয়ে মোট রিজার্ভ হ্রাস পেয়েছে ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, রিজার্ভে হাত না দিয়েই সরকার প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারের বিভিন্ন ধরনের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি দায় পরিশোধ করেছে। এর মধ্যে জ্বালানি আমদানির দায়, আদানির বিদ্যুৎ বিল এবং সার ও খাদ্য আমদানির মতো বিষয়গুলো রয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার রিজার্ভে হাত না দেয়ার কথা বললেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার বহির্মুখী ও অন্তর্মুখী প্রবাহ বিশ্লেষণেই প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাবে। আর বিদেশী ঋণের প্রবাহ কমে এলেও আগের বিভিন্ন দায় পরিশোধ করতে হচ্ছে সরকারকে। আবার দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ এবং প্রবৃদ্ধি কমে আসার প্রভাবও পড়েছে রিজার্ভের ওপর। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি না হলে রিজার্ভ স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে যাবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব মতে, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের সময় গত ৮ আগস্ট আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী (বিপিএম৬) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। সর্বশেষ ৫ ডিসেম্বর তা নেমে এসেছে ১৮ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলারে। সে অনুযায়ী চার মাসের ব্যবধানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ কমেছে ১ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত চার মাসে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর রিজার্ভও ক্রমাগত কমে এসেছে। গত জুলাইয়ে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর নস্ট্রো অ্যাকাউন্টে ডলার রিজার্ভ ছিল ৬ দশমিক শূন্য ৯ বিলিয়ন। কিন্তু অক্টোবর শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারে। অর্থাৎ চার মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ কমেছে প্রায় ১ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মোট রিজার্ভ হ্রাসের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৩ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলারে।

আজকের পত্রিকা

‘চ্যালেঞ্জের হিসাব কষে ভোট প্রস্তুতি সেরে রাখছে বিএনপি’-এটি দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রথম পাতার শিরোনাম। খবরে বলা হয়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের আগে থেকেই টানা রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। একটি সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে সেই অস্থিরতা কাটিয়ে ওঠার তাগিদ আছে প্রায় সব মহল থেকে। তবে আগামী নির্বাচন কেমন হবে, সে বিষয়ে অস্পষ্টতা থাকায় রাজনৈতিক দলগুলো সতর্কতার সঙ্গে পা ফেলছে। দুই প্রধান দলের একটি বিএনপি মনে করছে, এবার দলের জন্য পরিস্থিতি অনুকূলে আছে, এমনটা অনেকে মনে করলেও ক্ষমতাকেন্দ্রিক নানামুখী টানাপোড়েনের কারণে নির্বাচনের সময় ও ভোটের পর দলকে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হতে পারে।

এ কারণে প্রতিকূল পরিস্থিতির জন্য দলকে সাংগঠনিকভাবে তৈরি রাখার পাশাপাশি ভোটের প্রস্তুতিও সেরে রাখার দিকে মনোযোগী হয়েছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা।

বিএনপি কী চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, প্রশ্নটি তোলা হয় দলের বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েকজন নেতার কাছে। তাঁরা বলছেন, আগামী নির্বাচন কখন হবে, ভোটের পর নতুন সরকারব্যবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস কোনো ভূমিকা রাখতে চাইবেন কি না, এ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রভাবশালী প্রতিবেশী দেশ ভারত ও আওয়ামী লীগ কী পদক্ষেপ নেবে, আর নির্বাচনকে সামনে রেখে জামায়াতে ইসলামী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কখন কী কৌশল নেয়, তার ওপর বিএনপির ভোটের কৌশল, প্রার্থী মনোনয়ন ও অন্যান্য প্রস্তুতি অনেকটা নির্ভর করবে।

এ বিষয়ে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান গতকাল শুক্রবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেশ এলোমেলো অবস্থার মধ্য

দিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ছাড়লেও এর সুবিধাভোগীরা প্রশাসনে রয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন সুষ্ঠু ও প্রতিনিধিত্বমূলক করাটা গুরুত্ব পাবে সবার কাছে। এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার যে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করছে, সেগুলো বিএনপির জন্যও চ্যালেঞ্জ।’

দেশ রূপান্তর

‘হেলায় অবহেলায় শিক্ষা’-এটি দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হয়, দেশের শিক্ষাব্যবস্থা বিপর্যয়ের মুখে ফেলেছিল করোনাভাইরাস। সে সময় ব্যাহত হয় প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর পড়ালেখা। ধাপে ধাপে এ অচলাবস্থা কাটানোর চেষ্টা হলেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে গত কয়েক বছরে বারবার হোঁচট খেয়েছে দেশের শিক্ষাক্ষেত্র। সর্বশেষ ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষাক্ষেত্রে নানামুখী সমস্যা আরও তীব্র হয়। আন্দোলনের কারণে প্রায় চার মাস বন্ধ ছিল সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরপর তা খুললেও এখনো স্বাভাবিক হয়নি। নানা দাবি, আন্দোলনে শিক্ষা কার্যক্রম বারবার ব্যাহত হচ্ছে। কাটছে না সেশনজটের শঙ্কাও।

অন্যদিকে ঘন ঘন শিক্ষাক্রম পরিবর্তনে দিশেহারা হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে সরকারের নানান উদ্যোগ থাকলেও উপেক্ষিত থাকে শিক্ষা। সংস্কারের অংশ হিসেবে সরকার ছয়টি কমিশন গঠন করলেও, সেখানে জায়গা হয়নি শিক্ষার। এ নিয়ে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করতে দেখা যায় শিক্ষাবিদদের।

২০২৪-এর জুলাই আন্দোলনের কারণে প্রায় ছয় মাসের সেশনজটে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে এখনো বের হতে পারেননি তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৫ মাসে সেমিস্টার এবং ১১ মাসে বর্ষ শেষ করার পরিকল্পনা নিলেও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নিয়ে কোনো পরিকল্পনা দেখা যায়নি। একই শিক্ষাবর্ষের হয়েও সবাই একই সঙ্গে অনার্স কিংবা মাস্টার্সের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। আবার অনেকের ফলও প্রকাশ হয়ে যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের অনেক বিভাগের শিক্ষার্থী সম্প্রতি ঘোষিত ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষায় আবেদন করতে পারবেন না। অথচ একই বর্ষের অনেক শিক্ষার্থী চূড়ান্ত পরীক্ষা হয়ে যাওয়ায় আবেদন করতে পারবেন।

সেপ্টেম্বর মাসে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলেও প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন, শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে সরব থাকতে দেখা যায়। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলনে নামেন। অন্যদিকে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় নামকরণের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। যাত্রীবাহী ট্রেনে ঢিল ছুড়ে আহত করেন শিশুসহ অনেক যাত্রীকে।

এ ছাড়া ঢাকা কলেজ এবং সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে ভাঙচুর ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে হয় সংঘর্ষ। বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) আজিজ হল ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের লতিফ হলের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এসব ঘটনায় বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম। সৌজন্যে: মানবজমিন