ব্রিটেনে ভাড়াটিয়াদের উচ্ছেদ করে সমালোচনার মুখে পড়া মন্ত্রী রুশনারা আলীর পদত্যাগ

নিজের বাড়ির ভাড়াবৃদ্ধি করে ভাড়াটিয়াদের উচ্ছেদ করে ফের সেখানে নতুন ভাড়াটিয়া তুলে সমালোচনার মুখে পড়া রুশনারা আলী পদত্যাগ করেছেন। তিনি কিয়ার স্টারমারের মন্ত্রিসভার গৃহহীনবিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট তার পদত্যাগ নিশ্চিত করেছে।
বিবিসির প্রতিবেদেনে বলা হয়, এই পদত্যাগের পেছনে মূলত অভিযোগ ছিল— রুশনারা পূর্ব লন্ডনে নিজের মালিকানাধীন বাড়ির ভাড়া বাড়ানোর জন্য যে কৌশল অবলম্বন করেছেন, তা আইনের লঙ্ঘন।
বিবিসি জানিয়েছে, গত বছরের নভেম্বরে রুশনারা আলী বাড়ি বিক্রি করবেন জানিয়ে তার চার ভাড়াটিয়াকে চারমাসের নোটিশে বাড়ি ছাড়তে বলেন। কিন্তু তারা চলে যাওয়ার ছয় মাসের মধ্যেই সেই একই বাড়ি আবার নতুন করে প্রতি মাসে ৭০০ পাউন্ড বেশি ভাড়ায় দেওয়া হয়।
এ ঘটনার মাধ্যমে রুশনারা আলী ‘রেন্টার্স রাইট বিল’ অমান্য করেছেন বলে অভিযোগ। এই আইন অনুযায়ী, কোনো মালিক যদি বিক্রির উদ্দেশ্যে ভাড়াটিয়াকে বের করে দেন, তবে ছয় মাসের মধ্যে ভাড়া দেওয়া যাবে না।
ফলে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে পদত্যাগপত্র দেন রুশনারা আলী। এতে তিনি লিখেন, ‘আমি সবসময় আইনগত বাধ্যবাধকতা মেনেই কাজ করেছি। তবে এটি স্পষ্ট— আমার দায়িত্বে থাকা মানেই সরকারের কাজের জন্য একটি বিভ্রান্তি তৈরি হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখা সরকারের কাজকে বাধাগ্রস্ত করবে বলে আমি মনে করি। এজন্য আমি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার আলীর পদত্যাগে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন। আমি জানি, তিনি পেছন থেকে সরকারের কাজে সহায়তা করবেন এবং বেথনাল গ্রিন ও স্টেপনির জনগণের স্বার্থে কাজ চালিয়ে যাবেন।’
এ ঘটনায় লন্ডন রেন্টার্স ইউনিয়ন বলছে, রুশনারা আলীর আচরণ ছিল ‘অমার্জনীয়’।
রেন্টার্স রিফর্ম কোয়ালিশন নামে ভাড়াটিয়াদের আরেক সংগঠন জানিয়েছে, ‘এটি সঠিক সিদ্ধান্ত’ এবং তিনি মন্ত্রী হিসেবে আর দায়িত্ব পালনের যোগ্য ছিলেন না।
টোরি পার্টির চেয়ারম্যান কেভিন হলিনরেক বলেন, ‘আলী যে কাজ করেছেন তা অবিশ্বাস্য রকমের দ্বিচারিতা। আমরা তার পদত্যাগ দাবি করেছিলাম— এটা সঠিক সিদ্ধান্ত।’
লিবারেল ডেমোক্র্যাটদের এক মুখপাত্র বলেন, ‘রুশনারা আলী তার দায়িত্বটাই বুঝতে পারেননি।’
প্রসঙ্গত, রুশানারা আলীদের পৈত্রিক নিবাস সিলেটের বিশ্বনাথে।
উল্লেখ্য, এটাই প্রথম বিতর্ক নয় রুশনারা আলীর জীবনে। এর আগে গ্রেনফেল টাওয়ার অগ্নিকাণ্ড সংক্রান্ত তদন্তে সমালোচিত একটি কোম্পানির সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পর তাকে ভবন নিরাপত্তা সংক্রান্ত দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে হয়েছিল।