মালয়েশিয়ায় পাসপোর্ট নবায়ন জটিলতায় ২৬ হাজার বাংলাদেশি
মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশিরা পাসপোর্ট নবায়ন জটিলতায় পড়েছেন। পাসপোর্টের মেয়াদ না থাকায় ভিসা নবায়ন বন্ধ, দেশে ভ্রমণে আসতে না পারাসহ নানামুখী জটিলতায় দিন কাটাচ্ছেন ২৬ হাজারের বেশি বাংলাদেশি। সরকারি হিসাবে মালয়েশিয়ায় প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিক কাজ করেন।
সূত্র জানায়, মালয়েশিয়ায় এমআরপি পাসপোর্ট সেবা বন্ধ করায় রেমিট্যান্স শাটডাউনের ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছেন প্রবাসীরা।
তারা তাদের ভোগান্তির বার্তা পাঠাচ্ছেন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে। স্বৈরশাসনের নিষ্ঠুর হয়রানি আর স্ব স্ব দেশের কঠোর বিধি-নিষেধের ঝুঁকি সত্ত্বেও জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে নিঃশর্তভাবে সাপোর্ট দেওয়া প্রবাসীদের বিষয়ে আগাগোড়ায় সংবেদনশীল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কিন্তু কারিগরি কারণে তাদের পাসপোর্ট সমস্যার চটজলদি সমাধান অসম্ভব। একদিকে প্রবাসীদের কান্না, অন্যদিকে তাদের প্রতি দায় থেকে নড়েচড়ে বসেছে সরকার।
এদিকে অভিবাসী শ্রমিকদের পাসপোর্ট নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তার পেছনে কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের একাংশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দালালদের যোগসাজশ রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
হাইকমিশন সূত্র জানায়, যেহেতু ই-পাসপোর্ট প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি ও অনিয়ম করা কঠিন, তাই এই চক্রটি এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে যে কর্তৃপক্ষ আরো এমআরপি ইস্যু করতে বাধ্য হয়।
ভোগান্তি কমাতে ও প্রক্রিয়া সহজ করতে চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল মালয়েশিয়ায় ই-পাসপোর্ট সেবা চালু করে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু অক্টোবর পর্যন্ত হাইকমিশন ই-পাসপোর্ট আবেদন প্রক্রিয়া করেছে মাত্র ২০ হাজার ৮২৯টি, একই সময়ে ৫৬ হাজার ৮০টি এমআরপি আবেদন জমা পড়েছে।
ডিজিটাল প্রসেসের কারণে ই-পাসপোর্ট বিতরণ নির্বিঘ্ন হলেও এমআরপি বুকলেটের ঘাটতির কারণে প্রায় ২৬ হাজার ৯৬টি এমআরপি আবেদন আটকে আছে।
সংকট বাড়তে থাকার মধ্যে, এমআরপি বুকলেটের ঘাটতির কথা উল্লেখ করে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট ডিপার্টমেন্ট (ডিআইপি) গত ২৮ অক্টোবর কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনকে অতিরিক্ত ফি নিয়ে এমআরপি গ্রাহকদের ই-পাসপোর্ট দিতে অনুরোধ করেছিল।
হাইকমিশন সূত্র জানায়, ইএসকেএল প্রতিদিন ৪৫ ডেস্কে প্রায় ৮০০ জনকে সেবা দিয়ে আসছে, কিন্তু হাইকমিশনের কাছে এ ধরনের সুবিধা বা জনবল নেই। ইএসকেএলের সঙ্গে চুক্তি বাতিল হওয়ায় এখন বিকল্প খুঁজছে হাইকমিশন।
ইএসকেএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াস আহমেদ বলেন, ছয় বছরের চুক্তিতে প্রথম বছরের জন্য একটি প্রবেশনারি ক্লজ অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে আরও পাঁচ বছর বাড়ানো যেতে পারে।
তাদের পক্ষে কোনো অব্যবস্থাপনা নেই বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে।’