হাসিনার আশীর্বাদপুষ্ট ব্যক্তির সুবিধা নিয়ে নতুন বিতর্কে টিউলিপ
জুলাইয়ে যুক্তরাজ্যের নগরমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না টিউলিপ সিদ্দিকীর। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে সম্পত্তিজনিত আয় নিয়ে তদন্ত শুরু হয়, এবার নতুন করে খবরের শিরোনাম হয়েছেন তিনি।
শুক্রবার এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল জানিয়েছে, নিজের বাসা ভাড়া দিয়ে তার খালা শেখ হাসিনার বিশেষ বন্ধু আবদুল করিমের দুই মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের বিলাসবহুল বাসায় বর্তমানে অবস্থান করছেন টিউলিপ। এই প্রপার্টি টিউলিপ সিদ্দিকীর নিজের কেনা ঘর হতে অল্প দূরে অবস্থিত।
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে জানা যায়, শেখ হাসিনা আবদুল করিম নামের এই ব্রিটিশ বাংলাদেশিকে বিশেষ মর্যাদায় সিআইপি উপাধি দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান পদটিও পেতে সাহায্য করেছিলেন। অভিজ্ঞতা না থাকলেও হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতায় করিম ব্যাংকটিতে এমন অবস্থান পান।
আর খালা শেখ হাসিনার বিশেষ আশীর্বাদপুষ্ট এই ব্যক্তির নিকট থেকে অন্যায় সুবিধা আদায় করেছেন টিউলিপ। ওই পাঁচ বেডের বিলাসবহুল বাসা ভাড়ার তথ্যও লুকিয়েছেন তিনি।
ডেইলি মেইলের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও ব্যবসায়ী করিমকে কত ভাড়া দেওয়া হচ্ছে তা বলতে অস্বীকার করেছেন টিউলিপ। ওই ব্যবসায়ী টিউলিপকে তার বাড়িতে বসবাসের অনুমতি দিয়ে লাভবান হয়েছেন কিনা সেই প্রশ্নও উঠেছে। কারণ, গত দুই বছরে টিউলিপ তার পারিবারিক বাড়ি ভাড়া দিয়ে হাজার হাজার পাউন্ড আয় করেছেন।
যুক্তরাজ্যের আইন অনুযায়ী যদি কোনো এমপি কম ভাড়া দিয়ে কোনো আবাসনে বসবাস করেন, তাহলে তা সরকারকে অবহিত করা বাধ্যতামূলক। তা না হলে দেশটির আইনে এটি একটি বড় অন্যায় হিসেবে দেখা হয়।
রিফর্ম দলের চেয়ারম্যান নাইজেল ফারাজ লেবার সরকারের মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকীর এই কার্যক্রমকে সন্দেহের চোখে দেখছেন।
নাইজেল ফারাজ বলেন, সরকারের একজন মন্ত্রী যদি সঠিক তথ্য প্রদান না করেন এবং ভাড়া কম বা ভাড়া প্রদান না করে ঘরে অবস্থান করেন তাহলে সেটি বড় অন্যায়। আবদুল করিম নামের ব্যবসায়ী বন্ধুটি এর বিনিময়ে লেবার পার্টির মন্ত্রীর নিকট হতে অন্যায্য সুবিধা আদায় করার চেষ্টা করতে পারেন। লেবার পার্টি এমন লোককে মন্ত্রী বানিয়েছে কারণ এই দল গোলমেলে কাজ করতে পছন্দ করে।
আবদুল করিম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য শাখার একজন সদস্য। যুক্তরাজ্যে টিউলিপের নির্বাচনে তার খালার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কাজ করা নিয়ে আগে থেকেই বিতর্ক রয়েছে। গত সপ্তাহে সোমবার ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে পতন হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের। পদত্যাগী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে রয়েছেন। বিভিন্ন সূত্রের খবর, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।