ইতালিতে সড়ক দুর্ঘটনায় হবিগঞ্জের যুবকের মৃত্যু, শোকস্তব্ধ গ্রাম
পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরানোর আশায় লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর হয়ে স্বপ্নের দেশ ইতালিতে যায় হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের মিল্লিক গ্রামের টগবগে তরুণ মিসফাউর রহমান নাঈম (২২)। কিন্তু বিধি বাম। পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরানোর আগেই ইতালিতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে নবীগঞ্জের নাঈমের। পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরানোর স্বপ্ন অধরা রেখেই না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন নাঈম।
তার মৃত্যুতে পরিবার আত্মীস্বজনসহ বন্ধুমহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে নাঈমের মরদেহ দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের প্রতি দাবী জানিয়েছে নাঈমের পরিবার। দুই ভাইয়ের মধ্যে নাঈম সবার ছোট।
গত রোববার ইতালির স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে ট্রাইসেস স্পেসিয়া প্রাদেশিক সড়কে এক দুর্ঘটনায় নাঈমের মৃত্যু হয়। নিহত নাঈম নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের মিল্লিক গ্রামের সাঈদুর মিয়ার পুত্র।
জানা যায়, পরিবারের দুই ভাইয়ের মধ্যে নাঈম ছোট। পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে ইউরোপের দেশে যাওয়ার স্বপ্নে ২০২২ সালের শুরুর দিকে প্রথমে লিবিয়া যায় নাঈম। পরে দালালের মাধ্যমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে স্বপ্নের দেশ ইতালিতে পৌঁছায়। ইতালি পৌঁছার ৪ মাসের মাথায় সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রাণ হারায় নাঈম।
ইতালির সংবাদমাধ্যম রাই নিউজ আইটি সূত্রে জানা যায়, ইতালির স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে নিহত নাঈম স্কুটারযোগে কাজে যাচ্ছিলেন। ট্রাইসেস স্পেসিয়া প্রাদেশিক সড়ক লুকুগনানো ক্রীড়া মাঠের কাছে পৌঁছামাত্রই একটি প্রাইভেট কারের ধাক্কায় স্কুটার আরোহী নাঈম ও একটি বাইসাইকেল আরোহীসহ দুই বাংলাদেশী তরুণ ছিটকে পড়েন। এতে মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই মিসফাউর রহমান নাঈম (২২) মৃত্যুবরণ করে। গুরুতর আহত অবস্থায় অপর আহত বাংলাদেশী তরুণকে ট্রাইকেস পানিকো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাৎক্ষণিক ঘাতক গাড়ি চালককে আটক করে তার লাইসেন্স বাতিল করে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘাতক চালক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন বলেও জানা গেছে।
নাঈমের চাচা মশিউর রহমান টিটু জানান, প্রায় ৪ মাস আগে নাঈম ভূমধ্যসাগর পথে ইতালি পৌঁছায়। ইতালিতে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় সে মারা গেছে। সরকারের কাছে আমাদের একটাই দাবি আমার ভাতিজার মরদেহ যাতে বাড়িতে এনে দাফন করতে পারি।