খুলেছে অধিকাংশ পোশাক কারখানা, নিরাপত্তা জোরদার

খুলেছে অধিকাংশ পোশাক কারখানা, নিরাপত্তা জোরদার

বিভিন্ন দাবিতে গত দুই সপ্তাহ ধরে শিল্পাঞ্চল এলাকা আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। গত বৃহস্পতিবার আশুলিয়ার বন্ধ হওয়া ২১৯ কারখানার মধ্যে অধিকাংশই খুলে দেওয়ার পর সেগুলোতে শুরু হয়েছে উৎপাদন। তবে এখনও বন্ধ রয়েছে ৫২টি কারখানা। এর মধ্যে ৩৯টি কারখানা শ্রম আইনের ১৩/১ ধারায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে। এছাড়া ১৩টি কারখানায় কর্তৃপক্ষ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া শিল্পপুলিশ- ১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম।

দেখা যায়, আশুলিয়ায় কোথাও কোনো শ্রমিক বিক্ষোভ নেই ও শ্রমিকরা রাস্তায় নামেননি। কারখানাগুলোর নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‍্যাব ও শিল্প পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এর আগে শুক্রবার বিকেলে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় বিনোদন পার্ক ফ্যান্টাসি কিংডম মাঠে আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে কারখানায় কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম।

শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিভিন্ন দাবিতে টানা কয়েক দিন ধরেই শ্রমিকরা আন্দোলন করছে। কিন্তু মালিকপক্ষ দাবি মেনে না নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গেও কোনো আলোচনায় বা সিদ্ধান্তে বসেনি। যেসব কারখানাগুলোতে শ্রমিক এবং মালিকপক্ষ বসে আলোচনা হয়েছে, সেই কারখানা গুলোতে কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু আজও কিছু কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে এসে বন্ধ দেখে বাড়ি ফিরে যায়। এছাড়া সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেয়ার পরেও কিছু কারখানায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হলে ছুটি ঘোষণা করে কারখানা কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ গামের্ন্টেস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, শনিবার সকালে বেশির ভাগ পোশাক কারখানায় কাজ শুরু করেছে শ্রমিকরা। তবে কয়েকটি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার শ্রমিক অসন্তোষের জেরে শিল্পাঞ্চল এলাকা আশুলিয়ায় ৮৬টি কারখানা বন্ধ ছিল। এছাড়া ১৩৩টি কারখানা কর্তৃপক্ষ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল।

এদিকে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কারখানা ভাঙচুর ও কারখানা কর্মকর্তাদের মারধরের অভিযোগ এনে ২০ শ্রমিককের নামে মামলার প্রতিবাদে জামগড়া এলাকায় মদিনাপেল ফ্যাশন ক্রাফট লিমিটেডের শ্রমিকরা কারখানার সামনে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে। আয়োজিত মানববন্ধন থেকে শ্রমিকরা হয়রানি মূলক মামলা প্রত্যাহার ও বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় মোট কারখানা রয়েছে ১ হাজার ৮৬৩টি। এর মধ্য অধিকাংশই পোশাক কারখানা। গত কয়েক দিনের চেয়ে আজ শিল্পাঞ্চলের পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। তবে দাবি-দাওয়া নিয়ে সুরাহা না হওয়ায় এখন পর্যন্ত ৩৯টি কারখানা বন্ধ আছে। এছাড়া ১৩টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এসব কারখানার মধ্যে অধিকাংশই পোশাক কারখানা। দুই একটি রয়েছে ওষুধ ও জুতা তৈরি কারখানা। 

তিনি আরও বলেন, শনিবার শিল্পাঞ্চলের কোথাও কোনো কারখানায় অস্থিরতা দেখা যায়নি। এমনকি সড়ক অবরোধসহ কারখানায় হামলা বা ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেনি। পরিস্থিতি আজ অনেকটাই স্বাভাবিক রয়েছে। শিল্পাঞ্চলে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কারখানাগুলোর সামনে  অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া শিল্পাঞ্চলে যৌথবাহিনীর টহল অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।