মেধায় ৯৩ শতাংশ, কোটায় কার ভাগ কত?

মেধায় ৯৩ শতাংশ, কোটায় কার ভাগ কত?

সরকারি চাকরিতে কোটা পুর্নবহালের হাইকোর্টের আদেশ বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ। দীর্ঘ শুনানি শেষে রোববার (২১ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে এ আদেশ দেয়া হয়।

আপিল বিভাগ বলেছেন, এখন থেকে সরকারি চাকরিতে মেধা ভিত্তিতে ৯৩ শতাংশ নিয়োগ হবে। আর বাকি সাত শতাংশের মধ্যে পাঁচ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, এক শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, এক শতাংশ প্রতিবন্ধী-তৃতীয় লিঙ্গ কোটা হিসাবে থাকবে।

তবে সরকার চাইলে এই কোটার হার কমবেশি করতে পারবেন বলেও আপিল বিভাগ জানিয়েছেন। সরকারকে এই বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারির নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।এরআগে, সকাল সোয়া ১০টার দিকে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে শুনানি শুরু করেন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। শুনানিতে কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায়ে স্ববিরোধিতা রয়েছে জানিয়ে রায়টি বাতিলের আবেদন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) এ এম আমিন উদ্দিন। কোটার মতো সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়ে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না বলেও শুনানিতে উল্লেখ করেছেন তিনি। শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য দেয়ার জন্য পাঁচজন আইনজীবীকে অনুমতি দেন আদালত। সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে অংশ নেয়া নয়জন আইনজীবীর মধ্যে আটজনই হাইকোর্টের আদেশ বাতিল করার পক্ষে মত দেন। একজন আইনজীবী কোটা সংস্কারের পক্ষে মতামত দেন। আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত কোটাপদ্ধতি বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার। তখন সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ছিল ৩০ শতাংশ। এছাড়া ১০ শতাংশ নারী, ১০ শতাংশ জেলা, ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী এবং ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা ছিল। সব মিলিয়ে ৫৬ শতাংশ।কোটা বাতিল করে সরকারের পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট করেন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর রুল দেন হাইকোর্ট। চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত ৫ জুন রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। পরে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন চেম্বার আদালত হয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে ৪ জুলাই। রিট আবেদনকারীপক্ষ সময় চেয়ে আরজি জানালে সেদিন আপিল বিভাগ শুনানি পিছিয়ে দেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়। এ অবস্থায় কোটা পুনর্বহালসংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে গত ৯ জুলাই আবেদন করেন দুই শিক্ষার্থী। দুই শিক্ষার্থী ও রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন শুনানির জন্য ১০ জুলাই আপিল বিভাগে ওঠে। শুনানি শেষে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটার বিষয়ে পক্ষগুলোকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। কিছু পর্যবেক্ষণ, নির্দেশনাসহ এ আদেশ দেয়া হয়। এই স্থিতাবস্থা চার সপ্তাহের জন্য উল্লেখ করে আপিল বিভাগ আগামী ৭ আগস্ট পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন। পরবর্তীতে ২১ জুলাই শুনানির তারিখ ধার্য করেন আদালত। সূত্র: সময়টিভি