কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরও বাংলাদেশ থেকে ৬ নাগরিককে ফেরত নেয়নি ভারত

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরও বাংলাদেশ থেকে ৬ নাগরিককে ফেরত নেয়নি ভারত

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরও বাংলাদেশের জেলে থাকা নিজেদের ৬ নাগরিককে ফেরত নেয়নি ভারত। ওই ৬ জনের মধ্যে সোনালী বিবি নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীও আছেন।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্ট চার সপ্তাহের মধ্যে তাদের ফেরত আনতে বলেছিল। এই সময়সীমা ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে।

৬ নাগরিককে ফেরত না নেওয়ায় কেন্দ্র সরকারের ওপর ক্ষোভ ঝেরেছে দেশটির পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজসেবা মন্ত্রী শশি পাঞ্জা শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বলেছেন, কেন্দ্র সরকার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করেছে।

তিনি বলেন, “তাদের বাংলাদেশে পাঠানো ছিল ভুল। কে তাদের জন্য লড়াই করেছে? তৃণমূল কংগ্রেস… তাদের ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্র সরকার একটি উদ্যোগও নেয়নি। তাই ওই ৬ জন বাংলাদেশে রয়ে গেছে।”

রাজ্যসভার এমপি সামিরুল ইসলাম সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে বলেছেন, “বাংলাদেশের একটি আদালতও নিরূপণ করেছে যে এ ৬ জন বাংলাদেশি নয় এবং তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।”

“কিন্তু বিজেপির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্র সরকার আইন বা সংবিধান মেনে চলার বাধ্যবাধকতা ভুলে গেছে। তারা কলকাতা আদালতের বাধ্যতামূলক নির্দেশনা পালন করেনি এবং এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর কষ্ট আরও বাড়িয়েছে।”

বাংলাদেশে আটকে থাকা এসব মানুষের সাথে ঠিকমতো যোগাযোগ করা যায়নি বলে জানিয়েছেন এ ভারতীয় আইনপ্রণেতা। তবে অন্তঃসত্ত্বা সোনালী বিবি এখনো তার অনাগত সন্তানের জন্ম দেননি বলে জানিয়েছেন তিনি।

ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী এই ছয়জনকে ধরে বাংলাদেশে জোরপূর্বক পুশ-ইন করে। তারা কলকাতার বীরভূমের বাসিন্দা এবং ভারতীয় নাগরিক।

তারা হলেন সোনালী বিবি, তার স্বামী দানিশ শেখ এবং তাদের অপ্রাপ্তবয়স্ক এক নাতি। বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো অপর ৩ জন হলেন সুইটি বিবি, তার ছেলে কুরবান শেখ এবং ইমাম দেওয়ান।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর সোনালী খাতুনের বাবা বদু শেখ এবং সুইটি বেগমের ভাই আমির খানের পিটিশনের জবাবে কলকাতা হাইকোর্ট তাদের চার সপ্তাহের মধ্যে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেন।

তাদের দুজনের করা পিটিশনের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, এ ৬ জনকে বাংলাদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২ মে ২০২৫ তারিখের স্মারকলিপির (মেমো) পদ্ধতিগত নিয়মগুলো মানা হয়নি।

কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ তাদের নাগরিকত্বের বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত দেননি, তবে এই বিষয়ে জোর দিয়েছেন যে আইনানুগ প্রক্রিয়া পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে।

দুটি পিটিশনের ক্ষেত্রেই হাইকোর্টের আদেশে বলা হয়েছে, নির্বাসন (দেশ থেকে বের করে দেওয়া) দেওয়ার জন্য যে প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছিল, তাতে এই সন্দেহ জাগে যে ‍সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা “খুব তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২ মে ২০২৫ তারিখের স্মারকলিপির বিধানগুলো স্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করেছেন”।