যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হামাস
গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরে চুক্তির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। বিষয়টি এরইমধ্যে মিশরীয় ও কাতারি মধ্যস্থতাকারীদেরও জানিয়েছে তারা।
শীর্ষ এক হামাস নেতার বরাতে এ খবর জানিয়েছে আল জাজিরা।
সোমবার (৬ মে) যুদ্ধবিরতির বিষয়ে এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি এবং মিশরীয় গোয়েন্দামন্ত্রী আব্বাস কামেলের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন এবং তাদেরকে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মতির ব্যাপারে অবহিত করেছেন।
হামাসের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বল’ এখন ইসরায়েলের কোর্টে। প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব এখন তাদের ওপরই নির্ভর করছে। তবে যুদ্ধবিরতির চুক্তি করতে হামাস যতটা আগ্রহী ঠিক ততটা আগ্রহ ইসরায়েলের নেই বলে সম্প্রতি পরিষ্কার করেছে দেশটির সরকার। উল্টো তারা দক্ষিণ গাজার রাফায় আক্রমণ জোরদারের কথা জানিয়েছে।
হামাসের প্রস্তাবে স্বভাবতই গাজাবাসীর মধ্যে স্বস্তি দেখা গেছে। তবে যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কিছুই বলা হয়নি। বরং দেশটির একটি সংবাদমাধ্যম বলছে, এই প্রস্তাবে গ্রহণ করবে না ইসরায়েল। নির্ভরযোগ্য গণমাধ্যমে চ্যানেল থার্টিন বলছেন, মিশরের এমন প্রস্তাব হামাস গ্রহণ করেছে যা এরই মধ্যে ভেস্তে গেছে।
এর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, হামাস সেই সব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে যা জিম্মিদের পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম করবে এবং তাই আমাদের রাফাতে অভিযান শুরু করতে হবে।
যে চুক্তিতে হামাস সম্মত হয়েছে সে বিষয়ে আলজাজিরাকে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
গাজায় গত প্রায় সাত মাস ধরে সামরিক আগ্রাসন ও গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল। সারা বিশ্ব আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানালেও তাতে গুরুত্ব দিচ্ছে না দেশটির সরকার। সংঘাতের প্রথম দিকে গত বছরের নভেম্বর মাসে মাত্র সাতদিন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছিল। সেই সময় যুদ্ধবিরতির সুযোগে উভয় পক্ষ বন্দি বিনিময়ও করেছিল।
এরপর ফের যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু হলেও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর আপত্তিতে তাতে অচলাবস্থা তৈরি হয়। চলতি সপ্তাহে মিশরের রাজধানী কায়রোতে যুদ্ধবিরতি এবং হামাসের হাতে অবশিষ্ট ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির জন্য একটি চুক্তি নিশ্চিতে জোর আলোচনা শুরু হয়। তবে গত রবিবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে গাজা যুদ্ধ অবসানের জন্য হামাসের দাবি কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, ‘গাজায় যুদ্ধবিরতি ফিলিস্তিনি ইসলামপন্থি গোষ্ঠীটিকে ক্ষমতায় রাখবে। আর তারা ইসরায়েলের জন্য হুমকি হয়ে উঠবে।’