‘হাসিনাসহ আসামিদের শাস্তি না হলে শহীদ-আহতদের প্রতি অবিচার হবে’

সাবেক স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনাসহ অন্যান্য আসামিদের শাস্তি না হলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের প্রতি অবিচার করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ জুলাই-আগস্টে হত্যাযজ্ঞের মামলার যুক্তিতর্ক ও সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অ্যার্টনি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, এ হত্যাযজ্ঞ হয়েছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়। শেখ হাসিনাসহ আসামিদের শাস্তি না হলে শহীদ-আহতরা অবিচারের শিকার হবে।
আজ জুলাই হত্যাযজ্ঞের মামলায় সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিচারকাজ শেষ হলো।
এর আগে, গতকাল চব্বিশের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার অপরাধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে হাসিনা-কামালের খালাসের প্রত্যাশা করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত নিযুক্ত আইনজীবী। দায় থেকে বাঁচতেই সাবেক আইজিপি মামুন রাজসাক্ষী হয়েছেন বলেও দাবি তার।
ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা যায়, গত ৩ আগস্ট জুলাই-আগস্টের হত্যাযজ্ঞের মামলায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিচার শুরু হয়। এরপর ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ সাক্ষীর জবানবন্দি এবং ৬ কার্যদিবস যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে প্রসিকিউশন। শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে তিন দিনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়, যা শেষ হয় গতকাল বুধবার।
ওইদিন যুক্তিতর্কে সাবেক আইজিপি মামুনের রাজসাক্ষী হওয়া নিয়ে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন প্রশ্ন তোলেন। তিনি অভিযোগ করেন যে, দায় থেকে বাঁচতেই এ পথ বেছে নিয়েছেন তিনি। আন্দোলন দমনে শেখ হাসিনা মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেননি। হাসিনা-কামালের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে পারেনি বলেও দাবি করেন এ আইনজীবী।
শেখ হাসিনার এ মামলায় ৮৪ জনকে সাক্ষী করা হলেও ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন ৫৪ জন। তাদের সবাইকেই জেরা করেছেন আমির হোসেন।
তবে প্রসিকিউশন জানায়, রায়ে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড হবে বলে প্রত্যাশা প্রসিকিউশনের।
গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার ও শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার। সাক্ষী করা হয়েছে ৮১ জনকে। গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এ মামলার প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।