এক অভিবাসীর নাছোড়বান্দা প্রচেষ্টা নিয়ে বিপাকে যুক্তরাজ্য

ছোট্ট নৌকায় ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছিলেন এক ইরানি অভিবাসী। ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ তাঁকে ফেরত পাঠিয়েছিল ফ্রান্সে, কিন্তু মাত্র এক মাসেরও কম সময় পর তিনি আবারও সেই একই পথ ধরে ফিরে এসেছেন যুক্তরাজ্যে। বিষয়টি বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) নিশ্চিত করেছে বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ইরানি নাগরিককে গত ৬ আগস্ট আটক করা হয়। পরবর্তীতে ১৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্য–ফ্রান্সের ‘ওয়ান ইন, ওয়ান আউট’ চুক্তির আওতায় তাঁকে ফ্রান্সে ফেরত পাঠানো হয়। তবে ১৮ অক্টোবর তিনি আবার ছোট নৌকা করে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ব্রিটেনে ফিরে আসেন।
দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ফ্রান্সে ফেরার পর ওই ব্যক্তি মানবপাচারকারীদের হাতে আধুনিক দাসত্বের শিকার হন। তিনি অভিযোগ করেন, “ওরা আমাকে পণ্যের মতো ব্যবহার করেছে। জোর করে কাজ করিয়েছে, নির্যাতন করেছে, বন্দুক তাক করে বলেছে—একটা কথা বললেই মেরে ফেলবে।”
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র দপ্তর সরাসরি ঘটনাটি স্বীকার না করলেও জানিয়েছে, এক অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে এবং দ্রুত তাঁকে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। দপ্তরের এক মুখপাত্র বলেন, “আমাদের সীমান্ত অপব্যবহার করা যাবে না। যাদের এখানে থাকার আইনি অধিকার নেই, আমরা তাদের সরিয়ে দেব।”
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যানস ফর রাইটস নেটওয়ার্ক–এর পরিচালক ম্যাডি হ্যারিস জানিয়েছেন, তাঁদের সংগঠন ইতোমধ্যে ওই ইরানি নাগরিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তিনি বলেন, “ফ্রান্সে ফেরার পর থেকেই ওই ব্যক্তি তীব্র আতঙ্কে ভুগছিলেন। তাঁর ধারণা ছিল, পাচারকারীরা আবারও তাঁকে নির্যাতন করতে পারে।”
গত জুলাইয়ে চালু হওয়া ‘ওয়ান ইন, ওয়ান আউট’ স্কিমের আওতায় অবৈধ অভিবাসীদের ফ্রান্সে ফেরত পাঠানো হচ্ছে, বিনিময়ে যুক্তরাজ্য আশ্রয় দিচ্ছে এমন শরণার্থীদের, যাদের প্রকৃত সুরক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় এখন পর্যন্ত ৪২ জনকে যুক্তরাজ্য থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে এবং ফ্রান্স থেকে ২৩ জনকে গ্রহণ করা হয়েছে।
সূত্র: বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান