খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র কিংবা যুক্তরাজ্যের বহুমুখী সুবিধাসংবলিত হাসপাতালেই চিকিৎসা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এর মধ্যে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথেরিন কুক গুলশানের বাসায় গিয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার বিষয়টি নিয়েই আলোচনা হয়েছে।
এদিকে খালেদা জিয়ার প্রয়াত ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি গত বৃহস্পতিবার লন্ডন থেকে ঢাকায় এসেছেন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, শর্মিলা রহমান বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকায় নেমে গুলশানের বাসায় যান। খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিতেই শর্মিলা রহমান ঢাকা এসেছেন বলে জানা গেছে।
খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার অগ্রগতি জানতে চাইলে বিএনপি প্রধানের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. আল-মামুন বলেন, ‘বিমানে ভ্রমণের জন্য শারীরিকভাবে তিনি এখনও পর্যন্ত ফিট নন। আরও কিছুটা সময় লাগবে। যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যে যেতে হলে স্বাভাবিকভাবেই দীর্ঘ সময় বিমানে থাকতে হবে। এসব নানা বিষয় নিয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করছি। উনার জন্য দেশের বাইরে থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আনা হবে।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিকেল বোর্ডের সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কয়েকটি হাসপাতালের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। ওইখানে হাসপাতাল নির্বাচনসহ আরও কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে। ম্যাডামের কন্ডিশন এখনও বিমানে ট্রাভেল করার মতো নয়। ইউকেতে নেওয়া হলে আট থেকে ১৩ ঘণ্টা সময় লাগে অথবা ইউএসএ নিতে হলে ১৮ থেকে ২১ ঘণ্টা ফ্লাইং আওয়ার লাগবে। কাজেই এই যাত্রার জন্য শারীরিক সুস্থতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই কিছুটা সময় লাগবে। বেশ কিছু জটিল চিকিৎসা করাতে অনেকটা সময় ম্যাডামকে বিদেশে থাকতে হবে।’
একটি সূত্র জানায়, খালেদা জিয়াকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে বিদেশে পাঠানোর চিন্তা করা হচ্ছে। এজন্য কাতার থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স (জরুরি বিমান পরিষেবা) আনার চেষ্টা করছে বিএনপি। ইতোমধ্যে সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। ওই বছরের অক্টোবরে হাইকোর্টে আপিল শুনানি শেষে সাজা বেড়ে হয় ১০ বছর। এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আরও সাত বছরের সাজা হয় বিএনপি নেত্রীর। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পরদিনই রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেন।