শাহপরানের মাজারে গান-বাজনা বন্ধের ঘোষণা
সিলেটের হযরত শাহপরান (রহ.) মাজারে এখন থেকে আর গান-বাজনা হবে না বলে জানানো হয়েছে।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এক ভিডিওবার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মাজারের খাদিম কাবুল আহমদ।
বার্তায় তিনি বলেন, খাদিম পরিবারের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে বলছি- মাজারে ওরস উপলক্ষে গান-বাজনা সম্পূর্ণ বন্ধ ঘোষণা করা হলো। কেউ ঢোল তবলা নিয়ে আসবেন না। এমনকি প্রতি বৃহস্পতিবার যে গান-বাজনার আয়োজন করা হয় তাও এখন থেকে বন্ধ থাকবে। কেউ যদি করার চেষ্টা করেন তাহলে আমরা তা প্রতিহত করবো।
এরআগে ধর্মপ্রাণ মুসল্লি, ছাত্র-জনতার মাজারে গান-বাজনা, মাদক সেবনসহ সকল প্রকার অশ্লীল কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানিয়ে শুক্রবার বাদ জুম্মা মুসল্লি, ছাত্র-জনতা ও স্থানীয় ধর্মীয় নেতারা শাহপরান (রহ.) মাজার গেইটে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা অসামাজিক, অনৈসলামিক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে বিশ্ববরেণ্য ওলিয়ে কামেল হযরত শাহপরান (রহ.) এর পবিত্র মাজারকে কেন্দ্র করে ওরসের নাচ-গান, মদ-জুয়া, গাঁজা, অশ্লীল নারী নৃত্যসহ যাবতীয় অসামাজিক-অনৈতিক কার্যকলাপ বন্ধের দাবি জানান।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বন্দরবাজার কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব মাওলানা মোস্তাক আহমদ, জামিয়া কাজির বাজার মাদ্রাসার মহাদ্দিস শাহ মমশাদ আলী, ৩৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন নাদিম, অসামাজিক-অইসলামিক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মাওলানা আফতারুল ইসলাম, শাহপরান মাজারের খাদেম সাজু আহমেদ, আত্-ত্বাকওয়া মসজিদের দায়িত্বশীল সবুর আহমেদ, শাহপরান মাজার মসজিদের খতিব মাওলানা মামুনুর রশিদ প্রমুখ।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশেনের ৩৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন নাদিম বলেন, মাজারে গান-বাজনা ও অশ্লীলতা বন্ধের বিষয়টি নিয়ে আমরা বৈঠক করেছি। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে শাহপরান মাজারে গান-বাজনা, মাদক সেবনসহ সকল প্রকার অশ্লীল কার্যক্রম এখন থেকে বন্ধ থাকবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহযোগিতা করবে। বিষয়টি তদারকি করার জন্য মুসল্লি, ছাত্র-জনতা ও আলেমদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন হবে।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর নিয়ম অনুযায়ী ৪, ৫ ও ৬ রবিউল আউয়াল তিন দিনব্যাপী ওরসের আয়োজন করে থাকে মাজার কর্তৃপক্ষ। কর্মসূচির মধ্যে প্রথম দিন খতমে কোরআন, দোয়া ও জিকির এবং মিলাদ মাহফিল। দ্বিতীয় দিন গিলাফ চড়ানো, গরু জবেহ, সারারাত জিকির ও মিলাদ মাহফিল এবং ভোর ৪টায় ফাতেহা পাঠ। শেষ দিন বাদ ফজর আখেরি মোনাজাতের পর নেওয়াজ বিতরণ করা হয়।
মাজার কর্তৃপক্ষের নির্দিষ্ট কর্মসূচির বাইরে ওরস চলাকালে ভক্ত আশেকানরা জায়গায় জায়গায় সমবেত হয়ে ভক্তিমূলক সংগীতের পাশাপাশি নাচেও অংশ নিয়ে থাকেন। এসব জায়গায় অনৈসলামিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ করে থাকেন অনেকেই।