সিলেটে হ ত্যা মামলায় বাবা ও দুই ছেলের আজীবন কারাদণ্ড

সিলেটে হ ত্যা মামলায় বাবা ও দুই ছেলের আজীবন কারাদণ্ড

সিলেটের বিশ্বনাথে কৃষক আব্দুর রউফ উরফে আব্দুর রব হত্যা মামলায় বাবা ও দুই ছেলের আজীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।দণ্ডপ্রাপ্তদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের বিচারক শায়লা শারমিন চাঞ্চল্যকর এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মোঃ কবির হোসেন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন- সিলেটের বিশ্বনাথ থানার ২ নং খাজাঞ্চী ইউনিয়নের তিলকপুর (গুমরগুল) গ্রামের মৃত আবরু মিয়ার ছেলে আশিক মিয়া (৬০), তার ছেলে মো. এমরান মিয়া (২২) ও কামরান মিয়া (১৮)। রায় ঘোষণাকালে দণ্ডপ্রাপ্ত আশিক মিয়া আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। অপর সাজাপ্রাপ্ত আসামী মো. এমরান মিয়া ও তার ভাই কামরান মিয়া পলাতক ছিলেন।

মামলার বরাত দিয়ে আদালত সূত্র জানায়, আসামীদের সাথে একই এলাকার মৃত রশিদ মিয়ার ছেলে আব্দুর রউফ উরফে আব্দুর রব (৪০) ও তার সহোদর মো. আব্দুল কুদ্দুসের সাথে জায়গা-জমি ও মামলা-মোকদ্দমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো।

২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারী সকালে আব্দুর রব গংদের রেকর্ডভুক্ত দখলী ভূমিতে আঃ রব ও তার ভাই আব্দুল কুদ্দুস সেচ মেশিন দিয়ে পানি সেচন করার জন্য পাম্প মেশিন স্থাপন করছিলেন। ওইদিন সকাল ৯ টার দিকে আসামী আশিক মিয়া, তার ছেলে এমরান ও কামরানসহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে দেশিয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আশিক মিয়া, এমরান মিয়া ও কামরান মিয়াসহ তার লোকজন আব্দুর রব ও আব্দুল কুদ্দুসের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় আসামীরা আব্দুর রব ও আব্দুল কুদ্দুসকে গুরুতর আহত করেন। তাদের শোর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে হামলাকারীদের কবল থেকে আঃ রব ও তার ভাই আঃ কুদ্দুসকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ঘটনার তিনদিন পর ২১ ফেব্রুয়ারী সকালে আব্দুর রউফ উরফে আব্দুর রব চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। পরে এ ঘটনায় মো. আব্দুল কুদ্দুস বাদি হয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং-১৭ (২১-০২-২০১৮)। দায়রা-২৮৬/২০২১।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে বিশ্বনাথ থানার এসআই মোঃ সফিকুল ইসলাম ৩ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালের ৩০ মার্চ এ মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র নং- ৫৪) দাখিল করেন এবং ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর থেকে আদালত এ মামলার চার্জগঠন (অভিযোগগঠন) করে বিচার কার্য্য শুরু করেন।

দীর্ঘ শুনানী ও ১৩ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি অ্যাডভোকেট মোঃ আব্দুছ ছাত্তার ও আসামীপক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সাইফুল আলম মামলাটি পরিচালনা করেন।