সিলেটে আরও দুটি মামলায় সাবেক মেয়র ও আ.লীগ নেতারা আসামি

সিলেটে আরও দুটি মামলায় সাবেক মেয়র ও আ.লীগ নেতারা আসামি

সিলেটে বিস্ফোরক আইনে আরও দু'টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। নগরের কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া এ দু'টি মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে। মামলা দু'টিতে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভাকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ৩৬৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। 

১৩ ও ১৬ নভেম্বর কোতোয়ালি থানায় এ দু'টি মামলা রেকর্ড হয়। একটি মামলা বাদি গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলসাইন্দ গ্রামের আবদুল লতিফের ছেলে মাছুম আহমদ (২৬)। অপরটির বাদি সিলেট নগরের শিবগঞ্জ সোনারপাড়ার বাসিন্দা আছমান মিয়ার ছেলে মো. জাহেদ আহমদ (৪২)।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) জাহেদ আহমদ বাদি হয়ে দায়ের করা মামলায় (নং ৩১(১১)২০২৪) আনোয়ারুজ্জামান ছাড়াও ১০৬ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়।

এ মামলায় এজাহারনামীয় আসামিদের মধ্যে রয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম (৩৫), সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ (৩০), মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খান (৫০), সাধারণ সম্পাদক  দেবাংশু দাস মিঠু (৪০), গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খায়রুল হক (৪৮), জকিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন (৫৫)।

মামলার এজাহারের ভাষ্যমতে, ৪ আগস্ট বেলা আড়াইটার দিকে বাদি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কর্মসূচিতে ছাত্রদের সাথে একত্মতা পোষণ করে জিন্দাবাজার থেকে কোর্ট পয়েন্টের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলে আসামিরা দাঙ্গা হাঙ্গামা হত্যা সংঘটন করার উদ্দেশ্যে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, কাটা রাইফেল, পাইপগান, রামদা, ককটেলসহ মারাত্মক অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হামলা চালায়। এতে বাদি গুলিবিদ্ধ ও মারাত্নক জখমপ্রাপ্ত হন। পরে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

অপরদিকে বুধবার (১৩ নভেম্বর) মাছুম আহমদ বাদি হয়ে দায়ের করা মামলায় (নং ২১(১১)২০২৪) ৪৯ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে।

এ মামলায় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ছাড়াও এজাহারনামীয় আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভাকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বিজিত চৌধুরী (৫২), সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজুর রহমান (৫৫) ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম (৫৫), বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব (৪৭), ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাব্বির আহমদ (৪৫), উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মুজিবুর রহমান মুজিব (৫৫)।

বাদির অভিযোগ, তিনি ১৯জুলাই বিকেল ৩টার দিকে সিলেট নগরের জিন্দাবাজার আগামী সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিএনপি'র কর্মসূচীতে অংশ নেন।এসময় আসামিরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মিছিলকে ছত্র ভঙ্গ করে দেয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ফের সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করলে আসামিরা তাদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে অতর্কিত গুলিবর্ষণ করে।এতে তার নাকে ও বাম পায়ের হাটুতে গুলি লাগে।