ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্রিটিশ রাজবধূ প্রিন্সেস অব ওয়েলস ক্যাথরিন
ভয়াবহ এক দুঃসংবাদ দিলেন বৃটেনের ভবিষ্যৎ রানী ৪২ বছর বয়সী প্রিন্সেস অব ওয়েলস কেট মিডলটন। জানিয়েছেন, ক্যান্সারে আক্রান্ত তিনি। চিকিৎসা নিচ্ছেন। কিন্তু মরণব্যাধি ক্যান্সার তাকে কতোটা সমীহ করবে তার পূর্বাভাস দেয়া অসম্ভব। এতে বৃটিশ, কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো এবং বিশ্বের অন্যান্য স্থানেও এক বেদনার ছায়া পড়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন স্কাই নিউজ। এ বছর বড়দিনের পর তাকে কোনো আনুষ্ঠানিক দায়িত্বে দেখা যায়নি। অনেকদিন ধরেই তার স্বাস্থ্য নিয়ে জল্পনা চলছিল। কিন্তু নিজেই সেই গোমর ফাঁস করলেন। বললেন, তার ক্যান্সার ধরা পড়েছে।
প্রতিরোধী কেমোথেরাপি নিচ্ছেন তিনি। ব্যক্তিগত বার্তায় কেট বলেছেন, জানুয়ারিতে পেটের সার্জারিটা সফল হয়েছে। তবে শুরুতে মনে করা হয়েছিল তার অবস্থা ক্যান্সার পর্যায়ে যায়নি। কিন্তু অপারেশনের পর পরীক্ষায় দেখা গেছে তার শরীরে ক্যান্সার বর্তমান। কেট বলেন, অবশ্যই এ খবরটা বিশাল এক ধাক্কা হিসেবে এসেছে। আমাদের পরিবারের তরুণ প্রজন্মের জন্য যা যা পারি আমি এবং (প্রিন্স) উইলিয়াম মিলে তা করছি। স্বামী প্রিন্স উইলিয়াম এবং তার দাম্পত্যে তারা তিনটি সন্তান- জর্জ, চার্লোটি এবং লুইসের পিতামাতা। কেট মিডলটন বলেছেন, চিকিৎসকরা তাকে ক্যান্সার প্রতিরোধী কেমোথেরাপি নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বর্তমানে এই চিকিৎসার প্রাথমিক পর্যায়ে আছেন তিনি। কেট বলেন, বড় রকমের একটি অপারেশনের পর নতুন এই কেমোথেরাপি নেয়ার জন্য আমাকে সুস্থ হতে কিছুটা সময় লেগেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে, জর্জ, চার্লোটি এবং লুইসের কাছে যেভাবে বিষয়টি উপযুক্ত হবে সেভাবে ব্যাখ্যা করতে আমাদের বেশ সময় লেগেছে। তাদেরকে আশ্বস্ত করেছি, আমি সুস্থ হয়ে যাবো।
তাদেরকে বলেছি, আমি সুস্থ আছি। বিভিন্ন বিষয়ে দৃষ্টি দিয়ে আমি দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছি- যা আমার ক্ষতকে সারিয়ে তুলতে সাহায্য করবে। তা হলো আমার মন, শরীর এবং মানসিক শক্তি। স্বামী প্রিন্স উইলিয়ামকে সবসময় তিনি কাছে পাচ্ছেন এমনটা বর্ণনা করে তার বিষয়ে বলেছেন, সে আমার স্বস্তি ও নিশ্চয়তার বড় উৎস। আপনাদের অনেকে আমাদের দু’জনের প্রতি যে ভালোবাসা, সমর্থন ও উদারতা দেখিয়েছেন তা ভীষণ অর্থবহ। উল্লেখ্য, প্রিন্সেস কেটের কেমোথেরাপি শুরু হয়েছে ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে। কখন বা কবে তা শেষ হবে বিষয়টি স্পষ্ট নয়। কেনসিংটন রাজপ্রাসাদ বলেছে, কোন ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত কেট তা তারা শেয়ার করবেন না। তারা বলেছেন, প্রিন্সেসের মেডিকেল গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার আছে। আমরা তাই করছি। ফলে কবে সুস্থ হয়ে আনুষ্ঠানিক দায়িত্বে ফিরবেন কেট মিডলটন তা স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে রাজপ্রাসাদ থেকে বলা হয়েছে, চিকিৎসকরা যখন তাকে অনুমতি দেবেন তখনই তিনি এসব দায়িত্বে ফিরবেন। এরই মধ্যে স্ত্রী ও পরিবারকে সমর্থন দিয়ে অব্যাহতভাবে ভারসাম্য রক্ষা এবং তার সরকারি দায়িত্ব পালন করবেন প্রিন্স উইলিয়াম। এমনটিই তিনি বছরের শুরু থেকে করছেন।
ডিসেম্বর থেকে সরকারি কোনো কাজে যুক্ত হতে দেখা যায়নি কেট মিডলটনকে। ওই সময় তাকে দেখা যায় নরফোকের স্যান্ড্রিংহ্যামে রাজপরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে বড়দিনে হাঁটছেন। বৃটেনের ভবিষ্যৎ এই রানীর দীর্ঘ অনুপস্থিতি দেখে বিশ্ব জুড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা জল্পনা ও কন্সপিরেসি থিওরি ছড়িয়ে পড়ে। তিনি ও তার তিন সন্তানের মা দিবসের একটি ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর তা এডিট করে প্রকাশিত হয় বিভিন্ন স্থানে। এতেও উন্মাদনা প্রশমিত হয়নি। এ সপ্তাহের শুরুতে দ্য সান উইলিয়াম-কেট দম্পতির একটি ভিডিও প্রকাশ করে। তাতে প্রিন্সেস কেটকে ‘সুপারি হ্যাপি’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। তার শ্বশুর রাজা চার্লস (৭৫) দু’মাসেরও কম সময় আগে ঘোষণা দেন, তারও ক্যান্সার ধরা পড়েছে। বর্ধিত মূত্রথলির চিকিৎসা নেয়ার পর এই খবর বেরিয়ে আছে। তবে তিনি কি ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত তা পরিষ্কার নয়। জানাও যাচ্ছে না তার ক্যান্সার কোন পর্যায়ে আছে। উল্লেখ্য, প্রিন্স উইলিয়াম ও প্রিন্স হ্যারির মা প্রিন্সেস ডায়ানা সারাবিশ্বের কাছে ছিলেন সমাদৃত। তার মৃত্যু সব মানুষকে কাঁদিয়েছে। তিনি বিশ্ব মানবতা, শিশুদের অধিকার সহ বিভিন্ন ইস্যুতে ছিলেন সোচ্চার। অনেকে বলেন, তার পথ ধরেই এগুচ্ছেন প্রিন্সেস কেট মিডলটন। তার মধ্যে অনেক মানুষ প্রয়াত প্রিন্সেস ডায়ানার বৈশিষ্ট্যগুলো দেখতে পান।