সিলেটে ন্যাশনাল ব্যাংকে টাকা না পেয়ে তালা ঝুলালেন গ্রাহকরা

সিলেটে ন্যাশনাল ব্যাংকে টাকা না পেয়ে তালা ঝুলালেন গ্রাহকরা

‘ব্যাংকে টাকা নেই। তাই টাকা তুলতে এসে ফিরে যাচ্ছেন গ্রাহকরা।’ সম্প্রতি এমন ভোগান্তিতে পড়া গ্রাহকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের শিবগঞ্জ শাখায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।  

বুধবার (৩০) অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ন্যাশনাল ব্যাংক শিবগঞ্জ শাখায় ভিড় করেন গ্রাহকরা। এসময় টাকা না পেয়ে উত্তেজিত গ্রাহকরা কর্মকর্তাদের ভেতরে রেখে ফটকে তালা দেন।  

ন্যাশনাল ব্যাংকের শিবগঞ্জ ব্রাঞ্চের গ্রাহক ফয়জুল কয়েছ বলেন, চিকিৎসার জন্য জায়গা বিক্রি করে ব্যাংকে ৮ লাখ জমা দিতে এলে ঠিকই জমা নিয়েছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। কিন্তু টাকা উত্তোলনের জন্য চেক নিয়ে এলে ৩ হাজার টাকার ওপরে আর দিচ্ছে না। এর বেশি টাকা উত্তোলন করতে পারবো না, এটা কীভাবে সম্ভব। এটা ব্যাংক না ডাকাতদের কারখানা? ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যদি এ সমস্যা সমাধান করতে না পারেন, তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানাবেন। অথচ জমা ও লোন দুটোই নিচ্ছে এবং দিচ্ছে।  

তালা ঝোলালেন কেন প্রশ্নে ক্ষোভের সুরে তিনি বলেন, আমরা কি ভিক্ষুক নাকি না লোন নিতে এসেছি? আমাদের টাকা না দেওয়ায় আমরা ব্যাংকে তালা ঝুলিয়েছি। আমাদের মা-বোন প্রতিদিন টাকা জামা রাখেন, পরদিন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলে ব্যাংকে টাকা নেই।

আরেক গ্রাহক ইফজালুর রহমান ইফজাল বলেন, ভাই আমি অসুস্থ। আমি ভারতে যাব চিকিৎসা নিতে। ব্যাংক ম্যানেজার ৩ হাজার টাকার ওপরে দিচ্ছে না। ব্যাংক ম্যানেজার জানান ৬ মাসের মধ্যে সব ঠিক হবে। আমি এখন চিকিৎসা না করাতে পারলে টাকা কেন ব্যাংকে রাখলাম?

এব্যাপারে জানতে চাইলে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড শিবগঞ্জ শাখার সিনিয়র অ্যাসিসট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ম্যানেজার সাব্বির হাসান বলেন, ব্যাংকের তারল্য সংকটের কারণে গ্রাহকদের চাহিদামতো টাকা দেওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা এটি সমাধানের চেষ্টা করছেন।  

তিনি বলেন, তারল্য সংকট কাটিয়া ওঠার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর প্রতিনিয়ত বক্তব্য দিচ্ছেন,  যাতে ব্যাংকগুলোকে সহায়তা দিয়ে সংকট কাটিয়ে ওঠা যায়। গ্রাহকদের বিষয়টি সমাধানে কর্তৃপক্ষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।  

গ্রাহকদের অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি বলেন, আমাদের অবস্থান থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতির সমাধান দেওয়া সম্ভব না। যারা লাখ টাকার চেক নিয়ে আসছেন টাকা উত্তোলনে, তাদের ১০ হাজার কিংবা এরচেয়ে কম অ্যামাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। অবশ্য বিষয়টি দ্রুতই সমাধানের চেষ্টা চলছে।

এদিকে, পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসনকে তলব করা হয়। প্রশাসনের লোকজন ঘটনায় চলে এসে গ্রাহকদের বুঝিয়ে ব্যাংকের তালা খুলে দেন।