দাফনের ৪৪ দিন পর আন্দোলনে নিহত সাজ্জাদের মরদেহ উত্তোলন

দাফনের ৪৪ দিন পর আন্দোলনে নিহত সাজ্জাদের মরদেহ উত্তোলন

দাফনের ৪৪ দিন পর আদালতের নির্দেশে কোটা আন্দোলনে নিহত রংপুরের সবজি বিক্রেতা সাজ্জাদের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। সোমবার (০২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নগরীর শালবন মিস্ত্রীপাড়া কবরস্থান থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ ও সেনা সদস্যদের উপস্থিতিতে নিহতের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। 

এ সময় নিহত সাজ্জাদের মা ময়না বেগম ও বড় বোন বাবলী আক্তারসহ স্বজনরাও উপস্থিত ছিলেন। পরে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে সাজ্জাদের মরদেহ পাঠানো হয়। 

নিহত সবজি বিক্রেতা সাজ্জাদ গত ১৯ জুলাই বিকেলে রংপুর সিটি বাজারের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। সেসময় পুলিশের চাপে মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরদিন শালবন মিস্ত্রীপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হয়েছিলো বলে দাবি করেন পরিবার। এরপর গত ২০ আগস্ট নিহতের স্ত্রী জিতু বেগম বাদী হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানাসহ ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করে রংপুর আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে আজ দুপুরে কবর থেকে নিহতের মরদেহ উত্তোলন করা হয়। 

মরদেহ উত্তোলনের সময় রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এটিএম আরিফ জানান, আদালতের নির্দেশে মামলার অধিকতর তদন্তের স্বার্থে সাজ্জাদের মরদেহ উত্তোলন করা হলো। ময়নাতদন্ত শেষে পুনরায় দাফন করা হবে। 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার এসআই খালেদ হোসেন জানান, গত ১৯ জুলাই সাজ্জাদ নিহত হন। এ ঘটনায় গত ২০ আগস্ট নিহতের স্ত্রী জিতু বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে ওই মামলার তদন্তের জন্য সাজ্জাদের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।

নিহত সাজ্জাদের মা ময়না বেগম বলেন, আমার ছেলে কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত ছিলো না। আন্দোলনে গিয়ে পুলিশের গুলিতে মারা গেছে। শেখ হাসিনার নির্দেশে আমার ছেলেকে গুলি করা হয়েছে। তাই শেখ হাসিনাসহ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানাই। 

উল্লেখ্য, নিহত সাজ্জাদ পেশা একজন ভ্রমমাণ সবজি বিক্রেতা। রংপুর নগরীর আরসিসিআই কলেজ সম্মুখে সবজি বিক্রি করে সংসার চালাতেন সাজ্জাদ। গত ১৯ জুলাই দোকানের মাল ক্রয় করতে গিয়ে রংপুর সিটি বাজারের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। সাজ্জাদের উপার্জনের ওপর নির্ভরশীল স্ত্রী জিতু বেগম, বিধবা মা ময়না বেগম ও তার পাঁচ বছর বয়সের ফুটফুটে এক কন্যা সন্তান। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে এখন দিশেহারা পরিবারটি।