গাজায় মসজিদ ও স্কুলে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ২৬
গাজা উপত্যকার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় একটি মসজিদ ও স্কুলে ২৬ জন প্রাণ হারিয়েছে। এই স্থাপনাগুলোতে গৃহহীন ফিলিস্তিনিরা আশ্রয় নিচ্ছিল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় রবিবার ভোরে দেইর আল-বালাহ এলাকায় ইবন রুশদ স্কুল ও আল-আকসা শহীদ মসজিদে হামলা হলে অনেক মানুষ আহত খয়। অন্যদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা স্থাপনালোতে অবস্থান করা হামাস যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল, যারা ‘কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ’ কেন্দ্র থেকে পরিচালনা করছিল।
বিবিসি কিছু ভিডিও যাচাই করে দেখেছে, মসজিদের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে মৃতদেহ ও রক্ত পড়ে রয়েছে। স্কুলে আগুন জ্বলছে এবং একজন ব্যক্তিকে স্ট্রেচারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এর আগে হামাস নিয়ন্ত্রিত বেসামরিক সুরক্ষা সংস্থা জানায়, মসজিদে হামলায় ২১ জন নিহত হয়েছে এবং আরো অনেকেই আহত হয়েছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার ঠিক এক বছর পূরণ হওয়ার সময় এ হামলাগুলো হলো।
সেই হামলায় প্রায় এক হাজার ২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মি হয়েছিল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, তার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ৪১ হাজার ৮৭০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৯৭ হাজারের বেশি আহত হয়েছে।
মসজিদে হামলা নিয়ে এক বিবৃতিতে হামাস অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর ধ্বংস করে তাদের মাথার ওপর ধ্বংসস্তূপ ফেলেছে। যার ফলে বহু মানুষ হতাহত হয়েছে।
অন্যদিকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ‘হামলার আগে বেসামরিকদের ক্ষতির ঝুঁকি কমানোর জন্য সুনির্দিষ্ট অস্ত্র, আকাশে নজরদারি ও অতিরিক্ত গোয়েন্দা তথ্য ব্যবহার করা হয়েছিল।’
আইডিএফ আরো দাবি করেছে, হামাস ‘বেসামরিক প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ মানুষকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।’ হামাস অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং বলেছে, তারা স্কুল ও বেসামরিক স্থাপনাকে সামরিক কাজে ব্যবহার করে না।
এদিকে গাজার উত্তরের জাবালিয়া এলাকায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী রাতের বেলায় ঘিরে ফেলে। আইডিএফের দাবি অনুযায়ী, হামাস সেখানে পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে।
সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, স্থল অভিযান শুরু করার আগে এবং চলাকালীন তারা ‘বহু সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে’ আঘাত হেনেছে।
আইডিএফ উত্তর গাজাকে এখনো ‘বিপজ্জনক যুদ্ধক্ষেত্র’ হিসেবে বিবেচনা করছে এবং রবিবার নতুন একটি মানচিত্র প্রকাশ করেছে, যাতে উত্তরে মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার সম্ভাব্য এলাকাগুলো দেখানো হয়েছে।
আইডিএফ আরো জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসিতে মানবিক এলাকার পরিসর বাড়ানো হয়েছে। রবিবার আঘাতপ্রাপ্ত মসজিদ ও স্কুল মানবিক এলাকার মধ্যে অবস্থিত। ইসরায়েল আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকদের গাজায় স্বাধীনভাবে প্রবেশ করতে দেয় না, যার ফলে সেখানকার পরিস্থিতি যাচাই করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
সূত্র : বিবিসি