২৬ হাজারের বেশি কর্মী নেবে জার্মানি, আবেদন করবেন যেভাবে
দেশ-বিদেশ থেকে মাঝেই মাঝেই দক্ষ কর্মী চেয়ে নিয়োগ প্রকাশ করে থাকে জার্মানি। দেশটি শিক্ষকতা, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি নির্মাণ, প্রযুক্তিখাতসহ বিভিন্ন খাতে কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকে। ইংরেজি ভাষাগত দক্ষতার আইইএলটিএস ও কোনো ফি ছাড়াই আবেদনের সুযোগও দিয়ে থাকে কখনো কখনো। কিন্তু জার্মানিতে আবেদনের প্রক্রিয়া অনেকটাই অজানা থাকায় বিষয়টি অসম্ভব হয়ে উঠে অনেকের।
গত মাসেই জার্মান সরকারের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, শিক্ষকতা, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষ নির্মাণ, প্রযুক্তিখাতসহ বিভিন্ন খাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে দক্ষ কর্মী নেবে দেশটি। জার্মানির ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী ওই সময় দেখা যায়, বিভিন্ন খাতে একাধিক পদে ২৬ হাজারের বেশি কর্মী নেবে দেশটির সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। এ জন্য আগ্রহী প্রার্থীরা https://www.make-it-in-germany.com/en/working-in-germany/job/application ওয়েবসাইটে গিয়ে ‘ওয়ার্কিং ইন জার্মানি’ অপশনে ক্লিকের পর ‘প্রোফেশনস ইন ডিমান্ড, জব লিস্টিং’ ক্যাটাগরিতে পছন্দসই চাকরির বিজ্ঞপ্তি খুঁজে নিতে পারবেন।
সাধারণত জার্মানিতে চাকরির জন্য ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠাতে হয়। কাগজপত্রগুলো পিডিএফ ফাইল করে ই-মেইল করতে হয়। এছাড়া আপনি জার্মানি কোম্পানির ক্যারিয়ারবিষয়ক ওয়েবসাইটে সরাসরি আপলোডও করতে পারেন। অ্যাপ্লিকেশন ফোল্ডার করে ডাকযোগে আবেদনের খুবই কম প্রয়োজন হয়।
জার্মানিতে যেতে হলে প্রথমেই খুব মনোযোগ সহকারে চাকরির বিজ্ঞাপ্তিটি পড়তে হবে। কোন ধরনের আবেদন করতে বলা হয়েছে এবং কোন কোন কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে, তা উল্লেখ রয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। এসবের মধ্যে সাধারণত একটি কভার লেটার বা মোটিভেশন লেটার, একটি সিভি এবং অতিরিক্ত রেফারেন্স অন্তর্ভুক্ত থাকে। এবার তাহলে জার্মানিতে আবেদনের জন্য দেশটির সরকারের ওয়েবসাইট অনুযায়ী অন্যান্য বিষয় জেনে নেয়া যাক।
কভার লেটার বা মোটিভেশন লেটার: কভার লেটার হচ্ছে আপনার সম্পর্কে কোম্পানিকে প্রাথমিক ধারণা দেয়। এতে আপনার পরিচয় দেয়া, কোন পদবিতে কাজ করতে চান তার ব্যাখ্যা দেয়া এবং নিজের দক্ষতা বর্ণনা করতে হয়। এ জন্য আগের কাজ থেকে উদাহরণ ব্যবহার করে নিজেকে বিশ্বাসযোগ্যভাবে এবং এমনভাবে উপস্থাপন করুন, যাতে অন্যদের থেকে ব্যতিক্রম মনে হয় আপনাকে। যে পদে আবেদন করছেন, তাতে আপনি কেন যোগ্য ও সঠিক এবং প্রতিষ্ঠানটিতে আপনি কেমন কাজ করতে চান, সেটিও সুন্দর ও সাবলীলভাবে তুলে ধরুন।
জীবন বৃত্তান্ত: কারিকুলাম ভিটা বা সিভিতে আপনার ব্যক্তিগত ও পেশাগত কর্মজীবনের একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিন। সিভিতে সাধারণত একটি টেবিলের মতো বিন্যাস থাকে। জার্মানিতে আবেদনকারী প্রার্থীদের প্রায়ই তাদের সিভিতে একটি ছবি অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়। এখন জেনে নেয়া যাক সিভিতে যেসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
১. ব্যক্তিগত তথ্য: নিজের নাম, ঠিকানা ও যোগাযোগের বিবরণ।
২. কাজের অভিজ্ঞতা: আপনি কোন কোম্পানিতে কাজ করেছেন। প্রতিষ্ঠানটিতে আপনার পদবী কি ছিল এবং সেখানে কোন কাজগুলো করেছেন। এসব তথ্য অতীত থেকে বর্তমানের দিকে তালিকাভুক্ত করা উচিত। তবে সাম্প্রতিক কাজের বিবরণগুলো প্রথমে রাখবেন।
৩. শিক্ষা: স্কুল-কলেজ, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, অধ্যয়ন এবং এর বাইরে কোনো প্রশিক্ষণ নেয়া থাকলে সব তথ্য অতীত থেকে বর্তমানের দিকে তালিকাভুক্ত করতে হবে। স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম তালিকাভুক্ত করুন, কোর্স এবং ফলাফল যুক্ত করুন। সম্প্রতি ডিগ্রি অর্জন দিয়ে শুরু করুন বিন্যাসগুলো।
৪. ভাষাগত দক্ষতা: আপনি কোন ভাষায় কথা বলেন এবং সেই ভাষা কতটা ভালো বলতে পারেন, তা উল্লেখ করুন। প্রয়োজনে নির্দেশিকা হিসেবে সাধারণ ইউরোপীয় ফ্রেমওয়ার্ক অফ রেফারেন্স ফর ল্যাঙ্গুয়েজ (CEFR)-এর মানগুলো ব্যবহার করুন। যেমন- ইংরেজি: C1 ।
৫. অনন্য দক্ষতা এবং আগ্রহ: আপনার যদি অসাধারণ কোনো দক্ষতা বা কম্পিউটার দক্ষতা বা ব্যক্তিগত কোনো আগ্রহ থাকে, যা কাজের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাহলে সেগুলো উল্লেখ করুন। এছাড়া সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকলেও তাও যোগ করতে পারেন।