দেশে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ কমে ১৩ বিলিয়নে!
রিজার্ভ নিয়ে বড় দুশ্চিন্তায় পড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত আড়াই বছরে রিজার্ভের পতন কোনোভাবেই ঠেকাতে পারছে না আর্থিক খাতের এ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।
সোমবার (১৩ মে) এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আওতাধীন দেশগুলোর আমদানি বিল বাবদ ১ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করায় রিজার্ভে বড় ধাক্কা লেগেছে। আকুর বিল সমন্বয়ের পর গতকাল রোববার (১২ মে) মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলারে। তা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে বিপিএম-৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী ১৮ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে চলতি দেনার জন্য সংরক্ষিত ৫ দশমিক শূন্য ৮ ডলার বাদ দিয়ে নেট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) বা ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলারে। যা আগামী জুনের জন্য আইএমএফের নির্ধারিত রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ১৪ দশমিক ৮০ বিলিয়নের চেয়ে ১ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার ঘাটতি। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের মাধ্যমে মার্চ-এপ্রিল দুই মাসের ১ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল নিষ্পত্তির পর বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলারে। আর মোাট রিজার্ভ ২৩ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে চলতি দায় বাবাদ ৫ দশমিক ৮ ডলার বাদ দিয়ে এনআইআর বা ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলারে।
সাধারণত আঞ্চলিক আমদানির জন্য আকুর এই পেমেন্ট ব্যবস্থার অধীনে ৯টি সদস্য দেশের— বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করা হয়। প্রতি দুই মাস পর পর আকুর বিল পরিশোধ করতে হয়।
সূত্র জানায়, আইএমএফ ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ কর্মসূচির আওতায় আগামী জুন নাগাদ এনআইআরের হিসাবে রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে নির্ধারণ করেছে ১৪ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। সেটিও জুনের মধ্য পূরণ করা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। সর্বশেষে গত ৮ মে আইএমএফ এনআইআর বা ব্যয়যোগ্য রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে রয়েছে ১৪ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে রিজার্ভ লক্ষ্যমাত্রা ১৪ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার এবং ডিসেম্বর শেষে তা লক্ষ্যমাত্রা ১৫ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০২৫ সালের মার্চ শেষে ১৬ দশিক ৬১ বিলিয়ন ডলার এবং জুন শেষে তা ১৯ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২১ সালের আগস্ট মাসের রেকর্ড ৪৮ বিলিয়নের ডলার ছিল। মাত্র আড়াই বছরে গ্রেস রিজার্ভ নেমে আসে ২৩ বিলিয়নের ঘরে। আর ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ দাঁদিয়েছে প্রায় সোয়া ১৩ বিলিয়ন ডলারে।