হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে নিহত হয়েছেন ৭০ জনেরও বেশি সাংবাদিক

হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে নিহত হয়েছেন ৭০ জনেরও বেশি সাংবাদিক

২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১২ মাসে বিশ্বজুড়ে নিহত হয়েছেন ৯৯ জন সাংবাদিক। তাদের মধ্যে ৭২ জনই প্রাণ হারিয়েছেন ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান যুদ্ধের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে।

সাংবাদিকদের অধিকার ও নিরাপত্তা ইস্যুতে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে) বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এ তথ্য।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে যতজন সংবাদিক নিহত হয়েছেন, তা গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ এবং এই সাংবাদিকদের অধিকাংশই প্রাণ খুইয়েছেন বছরের শেষ তিন মাসে, হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ বাঁধার পর।

সিপিজের শীর্ষ নির্বাহী জডি জিন্সবার্গ বিবৃতিতে বলেন, ‘চলমান এই যুদ্ধে ফিলিস্তিনি সাংবাদিকরা যে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, তার একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়বে এবং শুধু ফিলিস্তিন নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্য অতিক্রম করে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়বে এই প্রভাব। সাংবাদিক নিহতের প্রত্যেকটি ঘটনা আসলে বিশ্ব সম্পর্কে আমাদের বোঝাপড়ার ওপর এক একটি আঘাত।’

এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি এক বিবৃতিতে সিপিজে বলেছিল, যুদ্ধের সংবাদ প্রচারে বাধা দেওয়ার জন্য গাজায় পরিকল্পিতভাবে সাংবাদিকদের হত্যা করছে ইসরায়েলি বাহিনী। পরে ব্যাপক সমালোচনার জেরে সেই বিবৃতি প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছিল সংস্থাটি।

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা গাজার উত্তরাঞ্চলীয় ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জন মানুষকে হত্যার পাশাপাশি ২৪০ জন ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে ধরে নিয়ে যায়। অভূতপূর্ব সেই হামলার পর সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।

চার মাসেরও বেশি সময় ধরে চলমান সেই অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ২৮ হাজারেরও বেশি মানুষ, আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭০ হাজার। এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর গোলায় বাড়িঘর হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন আরও লাখ লাখ ফিলিস্তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, ও মিসরের নিরলস চেষ্টায় গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭ দিনের অস্থায়ী বিরতি চুক্তি হয়েছিল হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে। সেই ৭ দিনে নিজেদের কব্জায় থাকায় জিম্মিদের মধ্যে ১০৮ জনকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। পাল্টায় ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে দেড়শর বেশি মানুষকে মুক্তি দিয়েছিল ইসরায়েলও।

হিসেব অনুযায়ী, হামাসের কব্জায় এখনও ১৩২ জন জিম্মি রয়েছে। তাদের ফিরে পেতে ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরু করেছেন জিম্মিদের স্বজনরা। ইসরায়েলের সাধারণ জনগণের একাংশও যোগ দিয়েছেন আন্দোলন কর্মসূচীতে। সূত্র : এএফপি