মৃত্যুর সময় স্ত্রী-সন্তানকে পাশে পেলেন না খালিদ
মারা গেছেন নব্বই দশকের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী খালিদ। সোমবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর গ্রিন রোডের বাসায় বুকে ব্যথা অনুভব করার পরপর সংজ্ঞা হারালে খালিদকে কমফোর্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই কর্তব্যরত চিকিৎসক সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে মৃত্যুর সময় স্ত্রী সন্তানকে পাশে পাননি খালিদ। এই সংগীতশিল্পীর স্ত্রী শামীমা জামান ও ছেলে জুহাইফা আরিক যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বসবাস করেন। সেখান থেকেই জেনেছেন গায়কের মৃত্যুর খবর।
বাবার মৃত্যুর খবরে খালিদের একমাত্র ছেলে জুহাইফা আরিক নিউইয়র্ক থেকে বলেন, ‘আমার বাবা সম্পূর্ন সুস্থ ছিলেন। তিনি ভালো ছিলেন। কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। আমি এই মুহূর্তে বিস্তারিত বলতে পারছি না। পরে বলবো। আপনারা সবাই তার জন্য দোয়া করবেন এবং তাকে ক্ষমা করে দেবেন।’
জানা যায়, অনেক দিন ধরেই গানের সঙ্গে ছিলেন না ‘সরলতার প্রতিমা’ খ্যাত গায়ক খালিদ। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে একেবারেই গান থেকে দূরে সরে যান, বেছে নেন প্রবাস জীবন। আমেরিকার নাগরিকত্ব নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস করতেন। তার একমাত্র ছেলে আরিক সেখানে পড়াশুনা করেন। মাঝে মাঝে দেশে আসলেও একাই থাকতেন খালিদ। নিজের গন্ডির বাইরে খুব একটা বের হতেন না। কিছুদিন থাকতেন ফের উড়াল দিতেন প্রবাসে। এবারও এলেন। কিন্তু আর প্রবাসে ফেরা হলো না। ফিরলেন অনন্তের পথে।
আশির দশকের প্রথম দিকে জনপ্রিয় ব্যান্ড চাইমের মাধ্যমে সঙ্গীতাঙ্গনে প্রবেশ করেন খালিদ। ব্যান্ডটির হয়ে বেশ কিছু অ্যালবামে গেয়েছেন তিনি। পরবর্তীতে নব্বই দশকে সলো ক্যারিয়ারেও সফলতা পান।
‘সরলতার প্রতিমা’, ‘যতটা মেঘ হলে বৃষ্টি নামে’, ‘কোনো কারণে ফেরানো গেল না তাকে’, ‘হয়নি যাবারও বেলা’, ‘যদি হিমালয় হয়ে দুঃখ আসে’, ‘তুমি নেই তাই’, ‘নাতি খাতি বেলা গেল’, ‘কীর্তনখোলা নদী’, ‘ঘুমাও’– এর মতো বহু জনপ্রিয় গানে কণ্ঠ দিয়েছেন খালিদ।
প্রিন্স মাহমুদ, জুয়েল-বাবুর সুরে তার গানগুলো শ্রোতাদের হৃদয়ে বিশেষ স্থান করে নিয়েছে আগেই। তবে ২০১০ পরবর্তী সময়গুলোতে গানে অনিয়মিত ছিলেন খালিদ। দেশ ছেড়ে পাড়ি জমান নিউ ইয়র্কে। সম্প্রতি তিনি ঢাকায় এসেছিলেন। জনপ্রিয় এই শিল্পীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে শোবিজ অঙ্গনে।