হাকালুকি হাওরে বন্যার শঙ্কায় ধান কাটার ধুম

হাকালুকি হাওরে  বন্যার শঙ্কায় ধান কাটার ধুম

মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওরের বড়লেখা অংশে এবার বোরোর বাম্পার ফলন হলেও ভারি বর্ষন, শিলাবৃষ্টি আর বন্যার শঙ্কা মাথায় নিয়ে বোরো ধান কাটছেন চাষীরা। হাওরে এবার বোরোর ভালো ফলন হয়েছে। তবে নিচু এলাকায় ভারি বৃষ্টিতে ক্ষেত ডুবে গেছে। কোথাও শিলার তান্ডবে অর্ধপাকা ধান ঝরে পড়েছে। শতভাগ ধান না পাকলেও কালবৈশাখী ঝড়-বৃষ্টি আর শিলার কারণে হাকালুকি হাওরে বোরো ধান কাটার ধুম পড়েছে।

বড়লেখায় এবার বোরোর আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৪শ’ ২৩ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫০ হেক্টর বেশি। এরমধ্যে হাকালুকি হাওর অঞ্চলে আবাদ হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার হেক্টরে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৩৮ হাজার টন ধানের। ভালো ফলন হওয়ায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছে কৃষি বিভাগ ও বোরো চাষীরা।

জানা গেছে, ৩১ মার্চের পর থেকে ভারি বর্ষন ও শিলাবৃষ্টি দেখা দেয়। এতে হাকালুকি হাওরের বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর, বর্নি ও সুজানগর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার কিছু জমির আধাপাকা ধানের জমি ডুবে যায়। হাওরের বালিজুরি বিলের পাড়ের কৃষকদের ব্যাপক আধাপাকা ধানের জমি সম্পুর্ণ ডুবে গেছে। আগাম বন্যার আশংকায় কৃষকরা এসব জমির আধাপকা ধান কাটা শুরু করেন। বড়ময়দান গ্রামের কৃষক আমান উল্লাহ, বেলাল আহমদ, মফিজ মিয়া, শিবির আহমদ প্রমুখ জানান, বালিজুরি বিলের পাড়ে শতাধিক কৃষক এবার অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি জায়গায় বোরো চাষ করেন। আগাম বন্যায় সকলের অধাপাকা ধান ডুবে গেছে। অনেকেই বিলের পাড়ে বসে কেঁদেছেন, পানিতে ডুবে যাওয়া ধান কাটছেন। বন্যা আর শিলাবৃষ্টি মাথায় নিয়ে গত প্রায় ১৫ দিন ধরে হাওরে ধান কাটার ধুম পড়েছে। কৃষকরা হাওরপাড়েই ধান কেটে নৌকা তোলে পাড়ে তোলা, মাড়াই, বস্তায় ভরার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

বড়লেখা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মনোয়ার হোসেন জানান, গত বছর হাওরের পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় ও অনুকুল আবহাওয়ার কারণে লক্ষ্যমাত্রার ৫০ হেক্টর বেশি জমিতে বোরোর চাষ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়। বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধানের এখনো বড় কোনো ক্ষতি হয়নি। এখন প্রায় ৭৫ ভাগ ধান কাটার উপযোগি। ইতিমধ্যে প্রায় ৩৫ ভাগ কাটা সম্পন্ন হয়েছে। কোনো বড় দুর্যোগ দেখা না দিলে আগামি এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।