মৌলভীবাজারে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট, চরম দুর্ভোগ

মৌলভীবাজারে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট, চরম দুর্ভোগ

মৌলভীবাজার জেলায় আকস্মিক বন্যার পানি কিছুটা নেমে গেলেও নিম্নাঞ্চলে পানিবন্দি মানুষের খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সংকট দেখা দেওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে। বিশেষ করে জেলার নদ-নদী ও হাওর তীরের বাসিন্দারা দুর্ভোগে বেশি পড়েছেন। জেলার কুলাউড়া, কমলগঞ্জ, রাজনগর, জুড়ী, মৌলভীবাজার সদরসহ সবকটি উপজেলার সাড়ে তিন লক্ষাধিক মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

মনু, ধলাই ও ফানাই নদের প্রায় ২০/২২টি স্পটে বাঁধ ভেঙে ও উপচে বানের পানি প্রবেশ করে নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাদের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, কৃষি ক্ষেত সবকিছুই গ্রাস করে বানের পানি। এখন পানি কমলেও সময় যত যাচ্ছে ততই দুর্গতি। জেলার হাকালুকি, কাউয়াদীঘি ও হাইল হাওরের তীরবর্তী এলাকারও বন্যা পরিস্থিতি চরম অবনতি হয়েছে।

আশিক মিয়া (৬৫), রহিম মিয়া (৪৬), সুফিয়া বেগম (৩৮) ও মো. রাসন মিয়া (৩৬) জানান, গত বুধবার বিকাল থেকেই তারা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। সঙ্গে গবাদিপশুও রয়েছে। নিজের ও গবাদিপশুগুলোর খাবার নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায়।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, রেলওয়ে ব্রিজ এলাকায় মনু নদীর পানি বিপদসীমার ১৪৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চাঁদনীঘাটে মনু নদীর পানি বিপদসীমার ৬৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। রেলওয়ে ব্রিজ এলাকায় ধলাই নদীর পানি বিপদসীমার ২৩৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

শেরপুর পয়েন্টে কুশিয়ারার পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (ভবানীপুরে জুড়ী নদীর পানি বিপদসীমার ১৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, সাত উপজেলায় বন্যা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ২ লাখ ৩৭ হাজার ৯৫ জন এবং ৪৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ৮৫৬১ জন। পৌরসভা ও ইউনিয়ন মিলে ৫০টি এলাকায় বন্যায় প্লাবিত হয়েছে ২১২ টি গ্রাম।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৮৫ মেট্রিক টন চাল ও সাতটি উপজেলায় নগদ বরাদ্দ ৪৫ লাখ টাকা, এর মধ্যে ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। মেডিক্যাল টিম রয়েছে ৬২টি। মজুত করা ত্রাণের পরিমাণ নগদ ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। চাল ১০৩৪ মেট্রিক টন।