সিলেট নগরে যানজটে ভোগান্তি চরমে; নেপথ্যে কি?

সিলেট নগরে দিন দিন যানজটের ফলে সাধারন মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে লাগামহীন ভাবে। নানা সময় অবৈধ গাড়ি পার্কিং কিংবা ফুটপাত দখল সহ নানা কারনে ভোগান্তি এখন নগরবাসীর নিত্যদিনের সঙ্গী হিসেবে পরিণত হয়েছে। ২০০৪ সালে সিলেট নগর সিটি করপারেশনে উন্নীত করণ হওয়ার পর সড়ক প্রস্থ করণে কোনো প্রক্রিয়া দেখা যায়নি। তবে সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরি দুই মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পর ভুমি অধিকগ্রহণের অংশ হিসেবে নানা সময় মানুষের কাছ থেকে চেয়ে সড়ক প্রস্থ করান তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় ছোট ছিল। এর পর দীর্ঘ সময় সিলেট নগরের রাস্তা প্রস্থ করা সহ নানা সমস্যা চেপে বসে নগরবাসীর কাধে।
যত্রতত্র পার্কিংয়ের ফলে যানজট বেড়ে চলছে এর সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে দেখা গেছে প্রতিদিন বেশি লাভের আশায় সিলেট নগরে বিভিন্ন এলাকা থেকে গাড়ি এসে জড়ো হয় পর্যাপ্ত পরিমান পার্কিং সুবিধা না থাকার কারনে এসব গাড়ি সড়কের পাশেই রাখেন চালকরা যার ফলে ভোগান্তী আরো বাড়ে। এ ছাড়াও ফুটপাত দখলের ফলে প্রতিদিন সিলেট নগরীরের প্রধান সড়কের রাস্তার প্রস্থ কমে আসে যার ফলে চলাচলে বাধা তৈরি হয় সাধারন মানুষের। এ ছাড়াও দীর্ঘ দিন থেকে সিলেট নগরের বেশ কয়েকটি সড়ক প্রস্থ না হও্যার ফলে জনভোগান্তী যেন কিছুতেই কমছে না।
এদিকে রমজান মাসকে সামনে রেখে সিলেটের মানুষ নগর কেন্দ্রিক হওয়ার ফলে যানজট সমস্যা আরো দিগুন হতে পারে বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ।
রাস্তা প্রস্থ সহ নানা বিষয়ে সোমবার সিলেটের সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ে লালাবাজার থেকে হুমায়ুন রশিদ চত্বর পর্যন্ত সড়ক প্রশস্থকরনের দাবি তুলে সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আম্বরখানা-বিমানবন্দর মহাসড়কে চার লেন-ছয় লেনের কথা বলা হলেও সিলেটবাসীর স্বপ্নের এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়নি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকমের বাহানা করে পিছিয়ে ফেলা হচ্ছে। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমল থেকে এখন পর্যন্ত ১৭ বছরেও তাদের যাছাই-বাচাই শেষ হচ্ছে না। বাংলাদেশের সব মহাসড়কে ইতোমধ্যে কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আমার অনুরোধ থাকবে পরিকল্পনা মন্ত্রনালয় দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেবেন। ঢাকা-সিলেট-তামাবিল সড়কে ৩০টি ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) প্রস্তাব রয়েছে তারমধ্যে মন্ত্রণালয়ে ৭টি প্রস্তাব প্রেরণ করা হলে ৩টি’র চুড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তাহলে আগামী আরও ৫ থেকে ৭ বছরেও এই প্রস্তাব আলোর মুখ দেখবে না।
সরেজমিনে সিলেট শহরের বন্দর বাজার কোর্ট পয়েন্ট থেকে শুরু করে আম্বরখানা পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, প্রধান সড়কের পাশে ছোট ছোট ভ্যানে ভাসমান ফুটপাত দখলের ফলে দীর্ঘ যানজট দেখা দিচ্ছে যার ফলে অনেক সময় জরুরী রগী কিংবা চাকরি প্রত্যাশিসহ নানা পেশার মানুষ সঠিক সময়ে কাজে পৌছাতে পারছেন না। এ ছাড়াও যত্রতত্র পার্কিংয়ের ফলে সড়ক অনেকটা বেদখলে যেখানে অনেকেই ট্রাফিক আইনের তোয়াক্কা করছেন না।
দিলিপ কুমার নামের এক রিকশা চালক বলেন, ফুটপাতগুলো যদি সরিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হত তাহলে সড়কের যানজট অনেকতা কমে যেতো। রমজান মাস সামনে এই রমজান মাসে যদি আমরা যানজটে দিনের বেশিভাগ সময় কাটিয়ে দিতে হয় তাহলে আয় করব কি?
এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেট জেলার সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সড়কে অনেকেই ট্রাফিক আইন মানছেন না। আমার মনে হয় যেহেতু পুলিশ একটা ট্রমার মধ্যে রয়েছে আমরা সবাই তাদের সহযোগিতা করা। এ ছাড়াও ফুটপাতের বিষয়ে যদি নোটিশ সহ পুর্ণবাসনের ব্যবস্থা করা যায় তাহলে আমার মনে হয় সমস্যা অনেকটা কমে আসবে।
সিলেট সিটি করপারেশনের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার বলেন, আসছে রমজান মাসকে সামনে রেখে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ হাতে নিয়েছি। শুধু আমরা নয় এ বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশ থেকে শুরু করে সবাই খুব আন্তরিক খুব জলদি এগুলো দৃশ্যমান হবে।