সিলেট নগরের ফুটপাত ও সড়ক দখলমুক্ত করতে যৌথবাহিনীর অভিযান

সিলেট নগরীর ফুটপাত ও সড়ক দখলমুক্ত করতে অভিযানে নেমেছে যৌথ বাহিনী। সোমবার নগরের বন্দরবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করে তারা।
সোমবার সকাল ১১ টায় এ অভিযান শুরু হয় সিলেটের সিটি সুপার মার্কেট থেকে। সেখানে প্রত্যেকটি দোকানের সামনে থেকে অবৈধ স্থাপনা ও মালপত্র উচ্ছেদ করা হয়। এরপর আশপাশের সড়কেও অভিযান চালানো হয়। এরআগে রোববার ফুটপাত দখলমুক্ত করতে এই অভিযান শুরু করে যৌথবাহিনী।
আভিযানের বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) বি এম আশরাফ উল্লাহ তাহের বলেন, যেখানেই জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হবে, সেখানেই আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। আমরা রোববার রাস্তাঘাট এবং ফুটপাত থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছিলাম, তার মূল কারণ ছিল হকারদের তাদের নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যাওয়া। এখন যে সমস্যাটি হচ্ছে, হকার মার্কেটে প্রবেশের যে রাস্তা সেটি অত্যন্ত সরু করে রাখা হয়েছে অবৈধ স্থাপনা দিয়ে। তাই সিটি সুপার মার্কেটে আমরা সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করছি।
এই অভিযানে পুলিশ, সেনাবাহিনী, সিলেট সিটি করপোরেশনের স্বেচ্ছাসেবকরাও ছিলেন৷
এই অভিযানে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদেরকে বারবার দোকানের সামনে থেকে জঞ্জাল সরানোর জন্য বলা হলেও তারা গড়িমসি করেছে। এই রাস্তা দিয়ে হকার্স মার্কেটে ক্রেতা-বিক্রেতারা যাতায়াত করে। তাছাড়া সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও যাতায়াত করে। সর্বোপরি যান চলাচলের বিঘ্ন ঘটায় এমন স্থাপনা না সরালে হকারদের প্রত্যাবর্তন ফলপ্রসূ হবে না। যে লক্ষ্যে রাস্তা ও ফুটপাত থেকে হকারদের সরানো হচ্ছে, সিটি সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী একইরকম রাস্তা ও ফুটপাত দখল করলে তো ফলপ্রসূ হবে না।
তিনি বলেন, যৌথ বাহিনীর এই অভিযানে জন দুর্ভোগ কমবে বলে মনে করি৷
এর আগে ২৪ অক্টোবর সিলেট মহানগর পুলিশের কনফারেন্স রুমে এক সভায় ফুটপাত দখলমুক্ত ও হকার উচ্ছেদ অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সভায় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিম, সেনাবাহিনী, সিলেট সিটি কর্পোরেশন, সিলেট হকার ঐক্য পরিষদ, পরিবহন মালিক সমিতি, শ্রমিক সমিতির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
চলতি বছরের ১০ মার্চ নগরের ফুটপাত ও সড়ক দখল করে থাকা হকারদের পুণর্বাসন করে লালদিঘী পাড় এলাকায় অস্থায়ী মার্কেট নির্মাণ করে দেয় সিটি করপোরেশন। প্রতিদিন দুপুর থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত এই মার্কেটের কার্যক্রম চলতো। প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে চার একর মাঠে মাটি ভরাট, ইটের সলিং, বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা করে দেয় সিলেট সিটি কর্পোরেশন। এ উদ্যোগের ফলে নগরের ফুটপাত ও সড়ক অনেকটাই দখলমুক্ত হয়।
তবে সরকার পতনের পর মেয়রের পদ থেকে অপসারিত হন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এতে অনেকটা স্থবির হয়ে পড়ে নগরভবনের কার্যক্রমও। এমন পরিস্থিতিতে হকাররা তাদের নির্ধারিত স্থান ছেড়ে ফের সড়ক ও ফুটপাত দখল করে বসে পড়েন। এতে নগরজুড়ে তৈরি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট। ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
সিটি করপরোশেনের পক্ষ থেকে একাধিকবার হকার উচ্ছেদে অভিযান চালানো হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। এবার তাই যৌথবাহিনী অভিযান নামলো।