চলতি মাসেই কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে বিএনপি

আগামী সংসদ নির্বাচনের দাবিতে এপ্রিল মাস থেকেই মাঠে নামবে বিএনপি এবং তাদের সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো । তাদের মূল লক্ষ্য হলো সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা এবং নির্বাচন আয়োজনের জন্য একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করা।
বিএনপি নেতারা দাবি করছেন, নির্বাচন সম্পর্কিত সরকারের বক্তব্যে অস্থিরতা এবং সময়ের মধ্যে পরিবর্তন দেশ ও বিদেশে নেতিবাচক বার্তা পাঠাচ্ছে।
তারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আবারও বৈঠক করবে এবং নির্বাচন শুরুর জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানাবে।
বিএনপি ও অন্যান্য দল নির্বাচনের জন্য সরকারের নিরপেক্ষতা আশা করছে। তারা বলছেন সরকার নির্বাচনের রোডম্যাপ না দিলে গণঅভ্যুত্থান ও জনবিক্ষোভের আশঙ্কা রয়েছে।
যদি সরকারের সময় বাড়ানো হয়, তা দেশের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে বলে মনে করছেন বিএনপি নেতারা।
বিএনপি এবং অন্যান্য দলগুলো ঐকমত্যের মাধ্যমে আন্দোলন চালাবে এবং নির্বাচনের রোডম্যাপ না দেওয়া হলে আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য এতদিন ধরে তারা সরকারের কাছে যে আহ্বান জানিয়ে আসছেন, ঈদের পর তা আরেকবার আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে চান। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আনুষ্ঠানিকভাবে হয়তো আহ্বান জানাব। তিনি কী পদক্ষেপ নেন এবং কী ঘোষণা দেন, তার জন্য কিছু সময় অপেক্ষা করব আমরা। এরপরও প্রত্যাশিত ঘোষণা না এলে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরব।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা যদি একেক সময় একেক কথা বলেন, দেখতে হবে কেন এভাবে বলছেন? আমরা আগে তার সঙ্গে কথা বলব। তার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি কী করেন, তা দেখব। তারপর আমাদের রাজনৈতিক বক্তব্য মাঠে-ময়দানে, জনগণের কাছে কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তুলে ধরব।
এদিকে, আগামী নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। নির্বাচনের ইস্যুতে বিভিন্ন দলের মধ্যে ঐকমত্যের অভাবও দেখা যাচ্ছে।
মহান স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য অস্পষ্ট। ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাস। এখনও কোনো রোডম্যাপ প্রকাশিত হয়নি। আমরা স্পষ্ট রোডম্যাপ এবং দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছি।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, সংস্কার ও বিচার ছাড়া নির্বাচন হলে সেটি মেনে নেওয়া হবে না। এ পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক মহলে নতুন একটি দাবির কথা উঠে এসেছে, যেখানে ইউনূস সরকারকে অন্তত ২০২৯ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ এনসিপির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম (উত্তরাঞ্চল) এ দাবি করেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারের ঘনিষ্ঠ কিছু বুদ্ধিজীবীর পরামর্শে এ দাবি উঠে আসতে পারে, যা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে জাতীয় সরকারে রূপান্তরিত করার প্রচেষ্টা হতে পারে। এ পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা মনে করছেন, সরকারের মেয়াদ বাড়ানো দেশের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।