উপজেলাতেও আওয়ামীলীগের আধিক্য
সিলেট বিভাগের ১১টি উপজেলায় ১ম ধাপের ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন গতকাল বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলাগুলো হলো সিলেটের সদর, বিশ্বনাথ, গোলাপগঞ্জ ও দক্ষিণ সুরমা, সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই ও শাল্লা, মৌলভীবাজার জেলার জুড়ি, কুলাউড়া ও বড়লেখা এবং হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ।
সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। বিজয়ীদের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের মতো যথারীতি আওয়ামী গীগ ঘরানার প্রার্থীদেরই আধিক্য। মোট ১১ উপজেলার মধ্যে ১০টিতেই ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ ঘরানার প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।
সিলেটের চার উপজেলা :
সিলেট সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সুজাত আলী রফিক কাপ-পিরিচ প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আনারস প্রতীকের আওয়ামী লীগ নেতা মো. সামসুল ইসলাম।
দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. বদরুল ইসলাম টেলিফোন প্রতীক নিয়ে ২১ হাজার ৭৬৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। ১৩ হাজার ৯৮৮ ভোট পেয়ে তার নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শামীম আহমদ (মোটরসাইকেল)।
গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিম দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আনারস প্রতীকে ব্রাজিল যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক আবু সুফিয়ান উজ্জ্বল।
বিশ্বনাথে কাপ পিরিচ প্রতীকে সাবেক উপজেলা পরিষদ ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি যুক্তরাজ্য প্রবাসী মোহাম্মদ সুহেল আহমদ চৌধুরী বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আনারস প্রতীক নিয়ে জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমেদ।
সুনামগঞ্জের দুই উপজেলা :
সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে প্রদীপ রায় এবং শাল্লায় অবনী মোহন দাস বিজয়ী হয়েছেন। দিরাই উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ৭৪ কেন্দ্রে বেসরকারিভাবে প্রাপ্ত ফলাফলে বিজয়ী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়। তিনি দোয়াত কলম প্রতীকে পেয়েছেন ৩০ হাজার ৪৫২ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রঞ্জন কুমার রায় ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ১৯ হাজার ৯৩৬ ভোট।
শাল্লা উপজেলার ৩৬ টি কেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফলে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও শাল্লা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অবনী মোহন দাস বিজয়ী হয়েছেন। তিনি ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ২৩ হাজার ৯৩২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শাল্লা উপজেলা বিএনপির সভাপতি (সদ্য বহিষ্কৃত) ও শাল্লা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গণেন্দ্র চন্দ্র সরকার (আনারস) প্রতীকে পেয়েছেন ১৪ হাজার ৫৭৬ ভোট।
মৌলভীবাজারের তিন উপজেলা :
কুলাউড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আল ইসলাহ’র সাধারণ সম্পাদক বর্তমান (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান ফজলুল হক খান সাহেদ দোয়াত-কলম প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কাপ পিরিচ প্রতীকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আ স ম কামরুল ইসলাম।
বড়লেখা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে বেসরকারিভাবে আওয়ামী লীগ নেতা আজির উদ্দিন বিজয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ঘোড়া প্রতীকে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ।
জুড়ী উপজেলায় কাপ-পিরিচ প্রতীকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক কিশোর রায় চৌধুরী মনি। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আনারস প্রতীকে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা এম এ মোঈদ ফারুক।
হবিগঞ্জের দুই উপজেলা :
বানিয়াচংয়ে আনারস প্রতীকে ইকবাল হোসেন খান বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন মোটরসাইকেল প্রতীকে বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কাশের চৌধুরী। আজমিরীগঞ্জে কাপ প্লেট প্রতীকে সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. আলাউদ্দিন মিয়া বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কৈ মাছ প্রতীকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি ও শিবপাশা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলী আমজাদ তালুকদার।