যুক্তরাজ্যে অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তার ও বিতাড়ন অভিযান

যুক্তরাজ্যে অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তার ও বিতাড়ন অভিযান

যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির সরকার নথিহীন অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে। তারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে এবং বেআইনি অভিবাসীদের গ্রেপ্তার করছে। ভারতীয় রোস্তোরাঁ, নেইল বার, গাড়ি ধোয়া ও অন্য দোকানগুলোতেও অভিযান হচ্ছে। সেই সব জায়গায় নথিহীন অবৈধ অভিবাসীরা কাজ করে কিনা তা দেখা হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এই অভিযান চলছে। জানুয়ারিতে মোট ৮২৮টি জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে, গত বছর জানুয়ারির তুলনায় যা ৪৮ শতাংশ বেশি। শুধু জানুয়ারিতেই ৬০৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৭৩ শতাংশ বেশি।

লেবার পার্টি ক্ষমতায় আসার পর থেকে এখনো পর্যন্ত ১৯ হাজার বেআইনি অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

কোথায় অভিযান হয়েছে?
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অফিস থেকে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় রোস্তোরাঁ, টেকঅ্যাওয়ে, ক্যাফে, খাবার, পানীয় ও তামাক শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সংস্থায় অভিযান চালানো হয়েছে।

উত্তর ইংল্যান্ডে একটি ভারতীয় রোস্তোরাঁ থেকে সাতজনকে গ্রেপ্তার ও চারজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, অভিবাসনের নিয়ম মানতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে মালিকরা বেআইনি অভিবাসীদের নিয়োগ ও শোষণ করেছে।

প্রচুর মানুষ বেআইনিভাবে এসেছে এবং তারা বেআইনিভাবে কাজ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
আরো বলা হয়েছে, এর ফলে ছোট নৌকা করে চ্যানেল পার হয়ে মানুষ বিপজ্জনকভাবে যুক্তরাজ্যে এসেছে। তার প্রভাব অভিবাসনব্যবস্থা ও দেশের অর্থনীতির ওপর পড়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জ
প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের ওপরও বেআইনি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রবল চাপ আছে। তিনিও চার্টার বিমানে করে বেআইনি অভিবাসীদের তাদের দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে।

যাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে, তাদের ভিডিও বা ছবিও প্রকাশ করা হচ্ছে। বাসে করে তাদের নিয়ে গিয়ে চার্টার করা বিমানে পাঠানো হচ্ছে। বলা হয়েছে, যাদের এভাবে ফেরত পাঠানো হচ্ছে, তারা মূলত মাদক, চুরি, ধর্ষণ ও হত্যার সঙ্গে যুক্ত অপরাধী।
হোম অফিসের আপলোড করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একজনকে হাতকড়া পরিয়ে বিমানে তোলা হচ্ছে। হোম অফিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০২৪ সালের ৫ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত অভিযান ও বেআইনি অভিবাসীদের গ্রেপ্তারের পরিমাণ ৩৮ শতাংশ বেড়েছে।

হোম অফিসের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টর অ্যাডি মন্টেগোমারি বলেছেন, ‘একটা কড়া বার্তা গেছে। যারা বেআইনিভাবে ঢুকছে তাদের লুকিয়ে থাকার কোনো জায়গা থাকবে না।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘আমরা জানি, অনেকে অসম্ভব গরিব বলে তারা এরকম বেআইনিভাবে কাজ করতে বাধ্য হয়, খুবই অসহায় মানুষকে রক্ষা করার যথাসাধ্য চেষ্টা আমরা করব।’