সিলেটে আবারও বন্যার শঙ্কা, প্রস্তুত ৫৫১ আশ্রয় কেন্দ্র
সিলেটে আবারও বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আগাম বন্যার সতর্কতা দিয়েছে জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড। গত ২৪ ঘন্টায় ভারতের মেঘালয়ার চেরাপুঞ্জি এবং সিলেটে ৫৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টিপাত আরও বেশী হতে পারে, এমন পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এর আগে গত ২৯ মে আগাম বন্যার পূর্বে দুইদিন মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৮০০ মিলিমিটার। এবার ২৪ ঘন্টায় ভারি বর্ষণে ভারতের চেরাপুঞ্জি ও বাংলাদেশের সিলেটে ৫৩৯ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের (আইএমডি) ওয়েব সাইট থেকে পাওো তথ্যমতে, গত ২৪ ঘন্টায় (বুধবার সকাল ৯টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) ৩৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এছাড়া আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘন্টায় (বুধবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) মাত্র ৪ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ভারি বর্ষণ হয়। এতে ১০৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এরপর সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত আরো ৮১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে সিলেট আবহাওয়া অফিস।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ৬ ঘন্টার ভারি বর্ষণে আবারো জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছেন নগরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। ভারি বর্ষণে রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। বাসা বাড়িতে ওঠেছে পানি। কোথাও রাস্তাঘাটে হাটু কিংবা উরু সমান পানি মাড়িয়ে চলাচল করতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। বিশেষ করে নগরের মেজরটিলা ইসলামপুর এলাকায় ভারি বর্ষণে রাস্তাঘাট ও দোকানপাট তলিয়ে গেছে। সাধারণ লোকজন উরু পানি মাড়িয়েও চলাচল করতে দেখা গেছে। অভিজাত এলাকা খ্যাত শাহজালাল উপশহরে আবারো অসংখ্য বাসার ভেতরে নীচ তলায় পানি ওঠেছে। বাসা-বাড়ির নীচে সেফটি ট্যাঙ্কে পানি ওঠে খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে, জানিয়েছেন বাসিন্দাদের অনেকে।
নগরের মীরাবাজার, যতরপুর, আগপাড়া, সোনারপাড়া, শিবগঞ্জ, সোবহানীঘাট, তেররতন, মেন্দিবাগ, ছড়ারপাড়, মাছিমপুর, দরগামহল্লা, পায়রা, জালালাবাদ, চৌহাট্টা, মিরবক্সটুলা, তালতলা, জামতলা, মনিপুরী রাজবাড়ি, মিরের ময়দান, কেওয়াপাড়া, বাগবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় ভারি বর্ষণে।
এরআগে গত শনিবার (০৮ জুন) সন্ধ্যা রাত থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়। এরপর রাত ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা ভারি বর্ষণ হয় সিলেটে। এই সময়ে ২২০ মিলিমিটার রেকর্ড বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় নগরের বিভিন্ন এলাকায়। এতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েন বাসিন্দারা।
এবার উজানে ভারতের ঢল ও ভারি বর্ষণে সিলেটে নদ নদীর পানি আবারো বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। দেখা দিতে পারে অকাল বন্যা। ফলে জেলা প্রশাসন আগে থেকেই সতর্কতা জারি করেছে।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোবারক হোসেন বলেন, আগাম বন্যার শঙ্কায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সকল দপ্তরকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ৫৫১ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেগুলো ২৯ মে বন্যার সময় প্রস্তুত করা হয়।