ছাত্র-জনতার বিজয় মিছিলে গিয়ে ১২ দিন ধরে নিখোঁজ শাহজাহান

ছাত্র-জনতার বিজয় মিছিলে গিয়ে ১২ দিন ধরে নিখোঁজ শাহজাহান

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট বিজয় মিছিলে এসে সামিল হন সিএনজি অটোরিকশা চালক মো. শাহজাহান আহমদ (২৬)। ওইদিন বিকেলে এসএমপির দক্ষিণ সুরমা থানা ঘেরাও করে ছাত্রজনতা। সে সময় চারজনকে আটক করে থানা কম্পাউন্ডে নেয় পুলিশ। এরপর থেকে শাহজাহান নিখোঁজ রয়েছেন। 

শনিবার (১৭ আগস্ট) ঘটনার পর ১২দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও শাহজাহানের সন্ধান পাননি পরিবারের সদস্যরা। এরইমধ্যে তারা থানায় খোঁজ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ছবি দিয়ে সন্ধান চেয়েছেন। কিন্তু শাহজাহানের কোনো খোঁজ মিলেনি। 

নিখোঁজ শাহজাহান আহমদ মৌলভীবাজার জেলার ছনকাপন গ্রামের হারুছ মিয়ার ছেলে। প্রায় ২২ বছর ধরে তাদের বসবাস সিলেটের দক্ষিণ সুরমার ধরাধরপুর এলাকায়। ৪ বোন ও ৭ ভাইয়ের মধ্যে শাহজাহানের অবস্থান সাত নম্বর। ঘরে তার ছয় বছরের এক ছেলে ও অন্ত:স্বত্ত্বা স্ত্রী রয়েছেন। 

শাহজাহানের ভাই পারভেজ আহমদ বলেন, সে দক্ষিণ সুরমার চন্ডিপুল স্ট্যান্ডে সিএনজি অটোরিকশা চালাতো। ছাত্র জনতার গণঅভ্যূত্থানে গত ৫ আগস্ট বিকেলে বিজয় মিছিলে যায়। দক্ষিণ সুরমা থানা ঘেরাওকালে পুলিশ তাকে আটক করেছে, জানতে পারেন। একটি ভিডিওচিত্রে তাকে দেখতে পান। এরপর থেকে তার কোনো হদিস মিলছে না। ছাত্রজনতার তোপের মুখে পুলিশ থানা কম্পাউন্ড ছেড়ে চলে যায়। তখন খালি থানা কম্পাউন্ডে তাকে খোঁজতে গিয়েও পাইনি। গত কয়েকদিন থেকে পুলিশী কার্যক্রম চালু হলেও সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ডের নেতৃবৃন্দ তার খোঁজে থানায় যান। কিন্তু কোনো তথ্য পাননি। 

ওইদিন পুলিশের গুলিতে রাইয়ান আহমদ (১৬) নামে এক স্কুল ছাত্র আহত হয়। তার মাথায় গুলি লাগে। দীর্ঘ ১২ দিন অজ্ঞান অবস্থায় ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন রাইয়ান। শনিবার (১৭ আগস্ট) সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে নেওয়া হয়।   

আহত রাইয়ানের মামা কুটু মিয়া বলেন, ওইদিন চার যুবককে আটক করে থানার ভেতরে নেয় পুলিশ। এরপর তাদের বিষয়ে কী হলো জানি না। এরমধ্যে দক্ষিণ সুরমার ধরাধরপুর গ্রামের সিএনজি অটোরিকশা চালক শাহজাহান আহমদ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন জানতে পেরেছি। 

এ বিষয়ে জানতে এসএমপির দক্ষিণ সুরমা থানায় ফোন দিলেও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান ছুটিতে আছেন জানিয়ে ওসি (তদন্ত) আবুল হোসেন বলেন, নিখোঁজ শাহজাহানের খোঁজে চন্ডিপুল সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ডের সভাপতি মাহমুদ হোসেনসহ নেতৃবৃন্দ এসেছিলেন। তাদের থানা হাজতসহ সব জায়গা ঘুরিয়ে দেখিয়েছি। তাছাড়া ৫ আগস্ট রাতে সব পুলিশ থানা ছেড়ে চলে যায়। ওইদিন আটকের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তাছাড়া এ কয়দিন থানায় নিখোঁজের কোনো সাধারণ ডায়েরীও হয়নি।