সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে থামছেই না মৃত্যুর মিছিল

সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে থামছেই না মৃত্যুর মিছিল

সিলেট-জৈন্তাপুর-তামাবিল মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল যেন থামছেই না। ২০২৩ সালে ১৬ জন ও চলতি বছরের ১৮ মার্চ পর্যন্ত ১৪ জনসহ ১৪ মাসে মোট ৩০ জনের প্রাণহানি হয়েছে এই সড়কে। এর মধ্যে গত পাঁচ মাসেই ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত সোমবার এ মহাসড়কে পাত্র সম্প্রদায়ের নারী-শিশুসহ ছয় জনের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। তারা একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন সাজগোজ করে। কিন্তু তারা জানতেন না এটাই হবে তাদের জীবনের শেষ সাজগোজ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, জৈন্তায় চোরাচালান বেড়ে যাওয়ার কারণে গাড়িগুলো বেপরোয়া গতিতে চলাচল করে। জানা গেছে, পর্যটন স্পট জাফলং, লালাখাল এবং ভারতের শিলং যেতে আসতে হাজার হাজার পর্যটক যাতায়াত করেন এই পথে । তাছাড়া স্থানীয় বাসিন্দাদের একমাত্র পথ জৈন্তা সড়ক। কিন্তু দীর্ঘ দিন থেকে সড়কটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। হাইওয়ে পুলিশও নির্বিকার। সিলেট রিজিওনের অ্যাডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, বেপরোয়া গতির কারণেই সোমবারের দুর্ঘটনা ঘটেছে। তার মতে, সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক অনেকটা অপ্রশস্ত। আর রাস্তায় অনেকগুলো বাঁক রয়েছে। পাশাপাশি রাস্তার পাশে অনেক স্থাপনার নির্মাণকাজ হচ্ছে। এ অবস্থায় দুর্ঘটনা রোধে স্থানীয় জনগণকে সচেতন হতে হবে।

তিনি বলেন, এ রুটে হাইওয়ে ও জেলা পুলিশ সপ্তাহব্যাপী ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছে। অতিরিক্ত গতির যানবাহন বন্ধ, অপ্রাপ্তবয়স্ক চালক শনাক্ত এবং রুট পারমিটবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করবে । এদিকে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সিলেট-তামাবিল সড়কে অবরোধ করে এলাকাবাসী। অবরোধের চার ঘণ্টা পর পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ তুলে নেয় স্থানীয়রা। অবরোধের কারণে সড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ থাকে। সিলেট ও তামাবিল অভিমুখে আটকা পড়ে শত শত যানবাহন।

প্রতিবাদকারীরা জানান, বারবার এই সড়কে দুর্ঘটনায় প্রাণ যায়। তারপরও প্রশাসন নির্লিপ্ত। জানা গেছে, সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের জৈন্তাপুর থেকে জাফলং অংশে রয়েছে বিপজ্জনক ১৫টি বাঁক। হাইওয়ে পুলিশ জানায়, এসব বাঁক খুবই দুর্ঘটনাপ্রবণ। এই বাঁকগুলোর কারণেই তামাবিল সড়ক যেন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনায় এখানে ঝরছে তাজা সব প্রাণ। এতে করে সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বাড়ছে।