বিবিসিসিআই কমিউনিটির পক্ষে রোল মডেলরূপে কাজ করে যাচ্ছে —ব্রিটিশ মন্ত্রী জনাতন রেনল্ডস এমপি
শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর হাইড টাউন হলে ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স এণ্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিবিসিসিআই) এর উদ্যোগে ব্রিটিশ ট্রেড এণ্ড কমার্স মিনিস্টার রোটারিয়ান জনাতন রেনল্ডস এমপি'র সাথে এক মত বিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। বিবিসিসিআই এর ডিরেক্টর ও নর্থ ওয়েস্ট রিজিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজানের উদ্যোগে আয়োজিত এই মত বিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন নর্থ ওয়েস্ট রিজিয়নের জেনারেল সেক্রেটারি আবদুল মালিক আহাদ। সভার আলোচনার মূল প্রতিপাদ্য ছিল ব্রিটেনে বাংলাদেশী বিজনেসের সকল ঝুঁকি নিরূপণ এবং ব্রিটিশ সরকারের সাথে এসবের সমাধান ও সহযোগিতার উপায় নির্ধারণ।
সভার শুরুতে জনাতন রেনল্ডস এমপি আগত সবাইকে স্বাগত জানান। তিনি তার শত ব্যস্ততার মধ্যেও স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ সবার সমস্যা মোকাবেলার প্রতিশ্রুতি পুণর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, আমি সব সময়ই লোকাল ব্যবসায়ীরা কি কি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, তা তাদের কাছ থেকে শুনতে চাই।
জোনাথান এই প্রসঙ্গে বিজনেস ও ট্রেড বিষয়ে তার সরকারের নেওয়া মূল অগ্রাধিকারগুলোর সংক্ষিপ্ত সার তুলে ধরেন। যেগুলোর মধ্যে ছোটো ছোটো ব্যবসার পরিকল্পনা, ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্ট্র্যাটেজি, ট্রেড স্ট্র্যাটেজি ও এমপ্লয়মেন্ট স্ট্র্যাটেজি অন্যতম। ব্যবসার জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির বিষয়েও তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।
তিনি বিবিসিসিআই'র কর্মতৎপরতার প্রশংসা করে বলেন, বিবিসিসিআই মেম্বাররা তাদের নিজস্ব ব্যবসা পরিচালনার পাশাপাশি স্থানীয় কমিউনিটিকে এগিয়ে নিতে এবং অর্থনীতিকে সচল রাখতে ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন।
মিজানুর রহমান মিজান তার স্বাগতিক বক্তব্যে অফিসিয়াল জনাতন রেনল্ডস এমপিসহ সভায় আগত সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বিবিসিসিআই'র কর্মপরিধি তুলে ধরে ব্রিটেন ও বাংলাদেশে ব্যবসায়িক সম্পর্কে ভূমিকা পালনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি তার বক্তব্যে বিভিন্ন সেক্টরে বিবিসিসিআই পাঁচ শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে অব্যাহত সাপোর্ট দিয়ে যাওয়ার কথাও উল্লেখ করেন।
প্রেস এণ্ড পাবলিসিটি সেক্রেটারি জাকি মোস্তফা তার বক্তব্যে ব্রিটিশ বাংলাদেশী ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাদের চ্যালেঞ্জ ও মাইনরিটিদের মালিকানাধীন ব্যবসা পরিচালনায় বাঁধা বিপত্তির বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
জেনারেল সেক্রেটারি আবদুল মালিক আহাদ তার বক্তব্যে নতুন নতুন জব সৃষ্টি, উদ্যোক্তাদের জন্য মেনটরশীপ প্রোগ্রাম ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরেন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন, আর্থিক সহযোগিতা প্রভৃতি বিষয়ে সরকার ও বিবিসিসিআই'র মধ্যে সুদৃঢ় সেতুবন্ধন সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
এসিস্টেন্ট সেক্রেটারি লাভলু কাদের লোকাল ব্যবসায় নতুন নতুন দিক উন্মোচনে বিবিসিসিআই'র প্রতিশ্রুতির কথা পুণর্ব্যক্ত করে এই বিষয়ে সরকারের সাথে কাজ করে যাওয়ার কথা বলেন।
মন্ত্রী ধৈর্যের সাথে বিবিসিসিআই'র মেম্বারদের বক্তব্য শোনেন এবং সকল প্রশ্নের উত্তর দেন। যেসব ঝুঁকি ও সমস্যা তুলে ধরা হয় তাতে তিনি একমত পোষণ করেন। এইসব বিষয়ে তার সরকারের প্রতিশ্রুতি পুণর্ব্যক্ত করেন। স্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনসহ স্থানীয় চেম্বার এইসব সমস্যা চিহ্নিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলেও মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
সাবেক জেনারেল সেক্রেটারি মুজাহিদ খান ডিএল বিবিসিসিআই'র কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা তুলে ধরেন। তিনি ওয়র্কিং গ্রুপ গঠন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উদ্ভাবনের প্রস্তাব দেন। বিশেষ করে ব্রিটিশ বাংলাদেশীদের মধ্যে নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টির বিষয়ে তিনি পরামর্শ প্রদান করেন।
জনাতন রেনল্ডস এমপি তার সমাপনী বক্তব্যে কমিউনিটির পক্ষে একটি রোল মডেল হিসাবে কাজ করে যাওয়ায় বিবিসিসিআই'র প্রশংসা করে সকল ঝুঁকি ও সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও সমাধানে সরকারের আন্তরিকতার কথা পুণর্ব্যক্ত করেন। মন্ত্রী বলেন, এ ধরনের মত বিনিময় চালিয়ে যেতে পারলে আমরা ব্যবসার সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে পারবো। আমরা নিশ্চিত হতে পারবো যে আমরা আমাদের স্থানীয় ব্যবসাক্ষেত্রে সঠিক সহযোগিতা দিতে পারছি।মন্ত্রী তার সরকারের প্রতিশ্রুতি পুণর্ব্যক্ত করে বলেন, ব্যবসায় প্রতিকূলতা-প্রতিবন্ধকতা দূর করতে ও ব্যবসার অনুকূল পরিবেশ রক্ষা করতে সরকার বিবিসিসিআই'র মতো সংস্থার সাথে কাজ করে যাবে। ব্যবসায় প্রণোদনা, সহযোগিতা প্রদান ও ভবিষ্যৎ সাপোর্ট প্রদানে তিনি তার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুজাহিদ খান ডিএল, রুহুল আমীন চৌধুরী, লাভলু কাদের, জাকি মোস্তফা, হালিম চৌধুরী, ফয়সল সৈয়দ, জাহাঙ্গীর চৌধুরী, সেলিম সিদ্দিকী প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শেষে মিনিস্টার রোটারিয়ান জনাতন রেনল্ডস এমপিকে ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স এণ্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিবিসিসিআই) এর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছার নিদর্শন স্বরূপ ক্রেস্ট প্রদান করা হয়